কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: স্কুলে নলকূপ প্রয়োজন। পড়ুয়ারা যাতে সহজে পানীয় জল পায় তার জন্য চলছে কাজ। কিন্তু সেখানেও উঠল তোলাবাজির অভিযোগ। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে ঘটল এমনই একটি ঘটনা। ওই এলাকার একটি স্কুলে নলকূপ বসাতে ঠিকাদারের কাছে তোলা চাওয়ার অভিযোগ উঠল ভিলেজ রিসোর্স পার্সনের বিরুদ্ধে। বিডিও-র কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তের দাবি, তিনি তৃণমূল করেন। অভিযোগ যদি প্রমাণ হয়, তাহলে রং না দেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
সম্প্রতি এলাকার বেশ কিছু স্কুলে নলকূপ বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতি। সেইমতো টেন্ডার ডাকা হয়। সেখানে যোগ দিয়ে বরাত পান এক ঠিকাদার। ঠিকাদারের দাবি, টেন্ডার জমা দিয়ে তিনি ৭০ হাজার টাকায় চিকনহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নলকূপ বসানোর বরাত পেয়েছেন।
কী অভিযোগ:
মঙ্গলবার স্কুলে নলকূপ বসাতে যান ওই ঠিকাদার। তখনই তাঁর কাছে ১০ হাজার টাকা তোলা দাবি করেন ভিলেজ রিসোর্স পার্সন বিশ্বজিৎ ঘোষ।
ওই ঠিকাদার শেখ মরজান আলির অভিযোগ, '৭০ হাজার টাকার কাজের বরাত পেয়েছি। আমার লোক স্কুলে নলকূপ বসাতে গিয়েছিল। তখনই তাতে বাধা দেয় বিশ্বজিৎ ঘোষ। আমার কর্মীদের মারধর করতে যায়। ১০ হাজার টাকা না দিলে কাজ করতে দেবে না বলে হুমকি দিয়েছে।'
অভিযুক্তের দাবি:
অভিযুক্ত ভিলেজ রিসোর্স পার্সন বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, 'আমি তৃণমূল করি। কাজে বাধা দিইনি। কাজ হচ্ছে জানতে পেরে গিয়েছি। কারা এই কাজ করতে বলেছে, এটাই জিজ্ঞাসা করেছি। টাকা চাওয়ার অভিযোগ মিথ্যা।'
রাজনৈতিক তরজা:
জামালপুরের ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেহমুদ খান বলেন, 'বিশ্বজিৎ ঘোষ তৃণমূলের নেতা নয়। মিটিং মিছিলে থাকতে পারে। এমন কাজ করে থাকলে তৃণমূল হোক আর যাই হোক আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকেই আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, 'এটা কাটমানির দল। বাচ্চারা জল খাবে সেখান থেকেই কাটমানি চাইছে।'
অভিযোগ পেয়ে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জামালপুরের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, 'অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।' এদিকে এমন ঘটনায় নলকূপ বসানোর কাজ থমকে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ, সমস্যায় পড়ুয়ারাও।
আরও পড়ুন: অনুমতি ছাড়াই শুরু সরকারি প্রকল্প! তদন্তের নির্দেশ জেলাশাসকের