কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানের খাগড়াগড় (Khagragarh) জাল নোটকাণ্ডে (fake note) মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধৃতদের ভাড়া বাড়িতে প্রায়ই আসতেন ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) এক ব্যক্তি। জাল টাকা পাচারের জন্য ছিল এজেন্ট। ধৃতদের জেরায় এমনই তথ্য মিলেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। মূল অভিযুক্তের ভাড়া বাড়িতে তল্লাশিতে ফের মিলল জাল নোটের ডাইস ও আরও রাসায়নিক।
জাল নোটকাণ্ডে নয়া তথ্য
জাল নোট পাচার চক্রের নেপথ্যে কি ঝাড়খণ্ড-যোগ? এজেন্টদের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হত জাল টাকা? পূর্ব বর্ধমানের খাগড়াগড়কাণ্ডের তদন্তে পরতে পরতে চাঞ্চল্য।
শনিবার ধৃত মূল অভিযুক্ত গোপাল সিংহকে নিয়ে তাঁর ভাড়া বাড়িতে ফের তল্লাশি চালায় পুলিশ। সূত্রের খবর, তল্লাশিতে আরও একটি জাল নোটের ডাইস, রাসায়নিক, ব্যাঙ্কের পাসবই, ও বেশ কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে।
ঘরে বসেই দীর্ঘক্ষণ ফোনে কথা বলতেন গোপাল। ফোনে 'পার্টি' শব্দটা ব্যবহার হত। পুলিশ মনে করছে পার্টি মানে যাঁরা জাল নোট পাচার করত তাঁরা।
তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতরা জেরায় জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ড থেকে এক ব্যক্তি প্রায়ই ভাড়া বাড়িতে আসতেন। এজেন্টের মাধ্যমে জাল নোট পাচার করা হত।
পূর্ব বর্ধমানের খাগড়াগড়ের বাসিন্দা সিন্থিয়া হকের কথায়, 'বড় বড় ব্যাগ নিয়ে অনেকেই আসত। ব্যাগ ভর্তি করে জিনিস নিয়ে চলে যেত। এদের মাধ্যমেই মনে হয় জাল টাকা পাচার হত।'
পুলিশের দাবি, এছাড়াও জাল নোট দিয়ে প্রতারণাচক্র চালানোর কথাও স্বীকার করেছে অভিযুক্তরা।
অভিযুক্ত গোপাল সিংহর আত্মীয় শিখা মাইতি বলছেন, 'রাসায়নিক দিয়ে টাকা রং করত। ব্যাগে করে টাকা দিয়ে আসত। টাকা কাটতে দেখেছি। যে টাকা পাওয়া যেত সেটা ভাগ করে নিত।'
২০১৪ সালে খাগড়াগড়ে একটি ভাড়া বাড়িতে ঘটে বিস্ফোরণ। এবারও জাল নোট চক্রের হদিশ মিলল ভাড়া বাড়িতে। এলাকাবাসীদের দাবি, এক পরিচারিকার মাধ্যমে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন মূল অভিযুক্ত গোপাল। ওই পরিচারিকা নিজেকে গোপালের স্ত্রী বলে পরিচয় দিত।
খাগড়াগড়ের বাসিন্দা আনিসুর রহমানের বক্তব্য, 'ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হতে হবে। তথ্য নিয়ে পুলিশকে জানাতে হবে। পুলিশকে দায়িত্ব নিতে হবে।'
পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। তবে প্রিন্টার, কম্পিউটার বা স্ক্যানার মেলেনি। এখানে জাল নোট ছাপা হত কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।