কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: মুখ্যমন্ত্রীর (Chief Minister) স্বপ্নের প্রকল্প 'মিষ্টিহাব' (Mishtihub) নতুন করে খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ,পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman) জেলাপ্রশাসনের দেওয়া সময়সীমা, কোনও কিছুই কাজে এল না। 'মিষ্টিহাব'-এ দোকান খোলা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়, জানিয়ে দিল সিংহভাগ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা (Sweet Shop Owners)।


'মিষ্টিহাব' নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা


পূর্বেও একাধিকবার দোকান খুলে অবস্থানগত কারণে ক্রেতাদের অভাবে প্রভূত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এমনটাই দাবি তাঁদের। তাই 'মিষ্টিহাব' বাঁচাতে জেলাপ্রশাসনকে তাদের পক্ষ থেকে একাধিক প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাবগুলিকে কার্যকর না করে ফের দোকান খুললে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি ছাড়া কোনও লাভ হবে না বলেও দাবী তাঁদের।


বর্ধমানের বাম এলাকায় গড়ে ওঠা মিষ্টিহাবে মোট ২৫ টি দোকান আছে।যার মধ্যে ১৫ টি দোকানই আজ লিখিতভাবে  জানিয়ে দেয় ক্ষতি স্বীকার করে তাদের পক্ষে দোকান খোলা সম্ভব নয়।


ভার্চুয়াল প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ


২৭ এপ্রিল নবান্ন থেকে ভার্চুয়াল প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প বর্ধমানের 'মিষ্টিহাব' খোলার তোড়জোড় শুরু করে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। বারবার 'মিষ্টিহাব'কে চালু করা এবং কিছুদিন পরই তা ফের ক্রেতার অভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া আটকাতে ৬ মে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে জেলাপ্রশাসন। নেওয়া হয় একাধিক ব্যবস্থাও। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তাদের দাবিতে অনড় থাকে।


ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যেহেতু মিহিদানা ও সীতাভোগ জিআই রেজিস্ট্রেশন পেয়েছে, পাশাপাশি ল্যাংচার জন্য আবেদনও করা হয়েছে তাই মিহিদানা, সীতাভোগ ও ল্যাংচাকে কেন্দ্র করে গবেষণা কেন্দ্র, উন্নতমানের রান্নাঘর, রপ্তানি করার মতো পরিকাঠোমো গড়ে তুলতে হবে। যদি তা না করা যায় তাহলে শত চেষ্টাতেও 'মিষ্টহাব' ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।


২০১৭ সালের ৭ এপ্রিল আসানসোল থেকে মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমানের ২ নং জাতীয় সড়কের বাম এলাকায় উদ্বোধন করেন তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প 'মিষ্টিহাব'-এর। কয়েকদিন চলার পরই তা মুখ থুবড়ে পড়ে ক্রেতার অভাবে। এরপরও বার কতক চেষ্টা করা হয় 'মিষ্টিহাব'কে চালু করার। কিন্তু অবস্থানগত সমস্যার জন্য তা সফল হয়নি।


আরও পড়ুন: Price Hike: পাইকারি বাজারে মুরগির দামে রেকর্ড, দাম বেড়েছে সবজিরও


মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের পক্ষে বর্ধমান মিহিদানা সীতাভোগ ট্রেডাস্ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রমোদ সিংহ বলেন, 'জেলা প্রশাসনের তরফে দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী আগামী ২২ মে আমরা দোকান খুলতে পারছি না। আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছি সেই প্রস্তাব মেনে নিলে আমরা আছি। পূর্বেও প্রভূত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। এতে আমাদের প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে। তাই যেভাবে আমাদের দোকান চালাতে বলছে প্রশাসন তা সম্ভব নয়। আমাদের প্রস্তাব অনুযায়ী যদি মিষ্টান্ন গবেষণা কেন্দ্র, গুণমান যাচাইয়ের ল্যাব, জিআই পাওয়া মিহিদানা সীতাভোগকে কাজে লাগিয়ে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও হাইজেনিক কিচেন তৈরি করা হয় তাহলে আমরা ভাবব। জেলা প্রশাসনের তরফে 'মিষ্টিহাব'-এ সরকারি বাস দাঁড় করানোর যে প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে তাও সম্ভব হবে না কারণ 'মিষ্টিহাব'-এর আগেই শক্তিগড়ে মিষ্টির ব্যবসা আছে।'


বর্ধমান উত্তর মহকুমাশাসক তীর্থঙ্কর বিশ্বাস জানান, কয়েকজন দোকানদার বিগতদিনে অভিজ্ঞতা থেকে তাঁদের অসুবিধার কথা লিখিতভাবে জানিয়েছেন। 'ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টা জানাব। তবে 'মিষ্টিহাব' খোলার ক্ষেত্রে সমস্ত রকমের সহযোগিতা জেলা প্রশাসন করবে।'