বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: দায়সারা ভাবে, নিম্নমানের সামগ্রী (low quality products) দিয়ে তৈরি হচ্ছে পাকা বাঁধ। এই অভিযোগ তুলে হলদি নদীর পাড়ে কংক্রিটের (concrete) বাঁধ (dam) তৈরির কাজ বন্ধ করে দিলেন হলদিয়ার (Haldia) বাঁশখানা জালপাই গ্রামের বাসিন্দারা। পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের (agitation) মুখে পড়লেন সেচ দফতরের সুপার ভাইজার। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। 


মাথার উপর দুর্যোগের মেঘ ঘনিয়ে আসছে...


মাথার ওপর দুর্যোগের মেঘ যত ঘন হয়ে আসছে, নদীবাঁধ নিয়ে অসন্তোষ ততই তীব্র হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। অতি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে কংক্রিটের নদীবাঁধ। এই অভিযোগ তুলে পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায় বাঁশখানা জালপাই গ্রামে কাজই বন্ধ করে দিল গ্রামবাসীদের একাংশ। 


অশনি, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তীব্র জলোচ্ছ্বাস হলে, হলদি নদীর বাঁধ তার ধাক্কা সামলাতে কতটা প্রস্তুত, মঙ্গলবার সকালে তা খতিয়ে দেখতে যান তমলুকের সেচ দফতরের সুপারভাইজার। তাঁকে সামনে পেয়ে কাজের মান নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন গ্রামবাসীরা। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজের প্রতিবাদে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা।


গত বছর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে দারুণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল হলদি নদীর এই বাঁধ। সেদিন মাটি আর বালির বস্তা ফেলে কোনও রকমে রক্ষা পেয়েছিলেন বাঁশখানা জালপাই এলাকার বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের দাবি মতো কংক্রিটের বাঁধ তৈরি শুরু হলেও, কাজের মান নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। 


হলদিয়ার বাঁশখানা জালপাইয়ের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ দলুই বলেন, 'একেবারে নিম্নমানের জিনিস দিয়ে কাজ হচ্ছে।' শুধু গ্রামবাসীরা নন। পাকা বাঁধ নির্মাণে খারাপ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ করছেন খোদ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি।


হলদিয়া পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল নেতা ও সভাপতি সুব্রত হাজরা বলছেন, 'ইটের কোয়ালিটি খারাপ। এক নম্বর ইটের জায়গায় ২ নম্বর ৩ নম্বর কোয়ালিটির ইট দিয়ে কাজ হচ্ছে। ইটের স্ল্যাবে নতুন ইটের জায়গায় পুরনো ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। ইটের জালি যেখানে ৪ ইঞ্চি ফাঁসে থাকার কথা, সেখানে ৬ ইঞ্জি ৭ ইঞ্চি ছাড়া হচ্ছে।'


তমলুক সেচ দফতরের সুপারভাইজার প্রসূন বসু বলেন, 'আমি এবিষয়ে কিচ্ছু বলতে পারব না। যা বলার আমার সাহেবকে রিপোর্ট করব।'


‘নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে পাকা বাঁধ নির্মাণ’


সেচ দফতরের কাজ নিয়ে সরব তৃণমূল নেতা। শাসকদলের সমালোচনা বিজেপির। তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'এই সরকারের আমলে ঠিকাদারদের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের যোগসাজশে গ্রামবাসীদের দুর্বিষহ অবস্থায় পড়তে হচ্ছে।'


অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। হলদিয়ার বিডিও সঞ্জয় দাস বলেন, 'গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন। সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলে নিম্নমানের বাঁধ যাতে না হয় তার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি।'


প্রশাসন সূত্রে খবর, বাঁশখানা জালপাই গ্রামে প্রায় ১ কিলোমিটার পাকা বাঁধ নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়েছে ২কোটি ৩৮ লক্ষ টাকার।