পূর্ব বর্ধমান: কালনা কলেজে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি উন্মোচন ঘিরে ধুন্ধুমার। কলেজের মধ্যেই বাঁশ-লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৪ জন। মাথা ফাটল এক তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থকের। টিএমসিপি-র অভিযোগ, বহিরাগতদের নিয়ে হামলা করেছে তৃণমূল বিধায়কের অনুগামীরা। কলেজের অনুষ্ঠানে তাদের ডাকা হয়নি বলেও অভিযোগ করেছে তাঁদের। তৃণমূল বিধায়কের পথ আটকে গো-ব্যাক স্লোগান দিতে থাকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। টিএমসিপি-র অসন্তোষের মুখে কলেজ ছাড়লেন বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ।


[insta]



উপলক্ষ্য ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি উন্মোচন! আর সেই অনুষ্ঠান ঘিরেই হিংসার সাক্ষী হল পূর্ব বর্ধমানের কালনা কলেজ। সংঘর্ষে জড়াল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠী। তৃণমূল বিধায়ককে কলেজের অনুষ্ঠানকক্ষে ঢুকতে দিল না তৃণমূল ছাত্র পরিষদই। রীতিমতো লাঠিসোটা নিয়ে চলল মারপিট!


ঝরল রক্ত। অনুষ্ঠান চলাকালীন টেবিল চাপড়ে চলল প্রতিবাদ। এখানেই শেষ নয়, তৃণমূল বিধায়কের পথ আটকে স্লোগান দিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরাই। শেষ অবধি বিরক্ত হয়ে কলেজ ছাড়েন তৃণমূল বিধায়ক। শুক্রবার কালনা কলেজে রবীন্দ্রনাথের এই মূর্তি উন্মোচন করেন মহকুমাশাসক। আমন্ত্রিত ছিলেন কালনার তৃণমূল বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ এবং পুরসভার চেয়ারম্যান-তৃণমূল নেতা আনন্দ দত্ত। 


কলেজের ছাত্র সংসদ টিএমসিপি-র দখলে রয়েছে। তারপরও বাংলা ও বিএড বিভাগের এই অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণ না জানানোর অভিযোগে, বিক্ষোভ দেখাছিলেন টিএমসিপি-র কয়েকজন সদস্য। এরপর তৃণমূল বিধায়ক পৌঁছতেই ওঠে স্লোগান!!


অনুষ্ঠানে না ঢুকতে পেরে ফিরে যান ক্ষুব্ধ বিধায়ক। তৃণমূল বিধায়ক কলেজে উপস্থিত থাকা অবস্থাতেই, সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠী। সূত্রের খবর, কলেজের টিএমসিপি সদস্যদের সঙ্গে মারপিট হয় তৃণমূল বিধায়কের অনুগামীদের। 


পূর্ব বর্ধমানের টিএমসিপির শেখ নইম আলির কথায়, বিধায়ক লোক দিয়ে আমাদের মারধর করাবে, এটা আমরা ভাবতে পারিনি। এমএলএ টিএমসিপি-র মধ্যে গ্রুপ তৈরি করছে। বাইরে থেকে ছেলেদের নিয়ে এসেছিলেন, এটা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।


কালনার তৃণমূল বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগের কথায়, আমি দলকে জানিয়েছে, এটা দলীয় কর্মসূচি ছিল না, যে বাইরে থেকে দলকে নিয়ে যাব। দলের নাম ভাঙিয়ে আমাকে স্লোগান দেওয়া হয়েছে। এরা দলের প্রকৃত কর্মী হলে, এটা করতে পারত না। যারা যেচে নিমন্ত্রণ পেতে ঘর দখল করে, তাঁরা তৃণমূলের কর্মী হতে পারে না।


অন্যদিকে যে আমন্ত্রণ পাওয়া নিয়ে এত গন্ডগোল, সেই প্রসঙ্গে কলেজ অধ্যক্ষের বক্তব্য, জায়গার অভাবেই সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো যায়নি। আমাদের শিক্ষার মধ্যে এমন একটা সম্পদ থাকা চাই, যা কেবল আমাদের তথ্য দেয় না, সত্য দেয়; যা কেবল ইন্ধন দেয় না, অগ্নি দেয়।


যার মূর্তি উন্মোচনের অনুষ্ঠান ঘিরে ধুন্ধুমার ঘটে গেল কালনা কলেজে, কথাগুলি লিখে গেছিলেন সেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু আমরা কী সেই প্রকৃত শিক্ষা পেয়েছি? প্রশ্ন তুলে দিল কালনা কলেজের ঘটনা।