রাণা দাস, মঙ্গলকোট (পূর্ব বর্ধমান) : গরুপাচার (Cow Smuggling) নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যেই মঙ্গলকোটে (Mangolkote) গ্রেফতার। ৫২টি গরু নিয়ে বীরভূমের দিকে যাওয়ার সময় ৪ জন গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নাকা চেকিং চলার সময় লরি ভর্তি গরু দেখে সন্দেহ হওয়ায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু, অভিযুক্তরা সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।


গরুপাচার নিয়ে যখন সিবিআই তদন্ত চলছে, তখন দিনকয়েক আগেই পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে ৫০টি মতো গরু উদ্ধার হয়। এরপর আজ মঙ্গলকোট থানার পুলিশ ৫৩টি গরু উদ্ধার করে। লরি করে এই গরুগুলি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


কী জানতে পেরেছে পুলিশ ?


এখনও পর্যন্ত পুলিশ জানতে পারছে, এই গরুগুলি মঙ্গলকোটের সেতু পেরিয়ে বীরভূমের দিকে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল। দুটি থাক করে গরুগুলিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এবং পুরো লরি ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ছিল। যাতে গরু আছে বোঝা না যায়। কিন্তু, পুলিশের নাকা চেকিংয়ের সময় সেগুলি ধরা পড়ে যায়। যারা গরু নিয়ে যাচ্ছিল, তারা কোনও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।


প্রসঙ্গত, অনুব্রত মণ্ডলের দ্বিতীয় গড় এই মঙ্গলকোট-কেতুগ্রাম ও আউশগ্রাম। সেই কেতুগ্রাম থেকেই কয়েকদিন আগে গরু উদ্ধার হয়।


এই পরিস্থিতিতে পুলিশ ধৃতদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করছে, কী উদ্দেশে বীরভূমের দিকে গরুগুলি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল। 


গরু পাচারকাণ্ডে আসানসোল জেলে বন্দী অনুব্রত মণ্ডল। এনিয়ে তদন্ত চলাকালীনই বীরভূম থেকে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম দিয়ে গরুপাচারের চেষ্টার অভিযোগে দিনকয়েক আগে গ্রেফতার করা হয় ৯ পাচারকারীকে। উদ্ধার করা হয় ৫০টি গরু, আটক করা হয় ২টি গাড়ি। খবর পেয়ে ভোররাতে বীরভূম-কাটোয়া রোডে সাদা পোশাকে নজরদারি চালায় কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। বৈধ নথি না থাকায় আটক করা হয় ৫০টি গরু।


কেতুগ্রামকে সেফ করিডর হিসেবে ব্যবহার করে নদিয়া, মুর্শিদাবাদে গরু পাচারের পরিকল্পনা ছিল বলে সূত্রের খবর।


উল্লেখ্য, সীমান্তে গরুপাচারে সশরীরে এবং প্রত্যক্ষভাবে মদত ছিল অনুব্রত মণ্ডলের। আদালতে জমা দেওয়া কেস ডায়েরিতে উল্লেখ করে সিবিআই। পাশাপাশি এর আগে আদালতে সিবিআই দাবি করে, সীমান্তে গরুপাচারে সেফ প্যাসেজ তৈরি করা, পরিবহণ ও সীমান্ত পারাপারে অনুব্রতর যে সরাসরি যোগ ছিল সে সম্পর্কে প্রচুর তথ্যপ্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। সিবিআইয়ের কেস ডায়েরিতে থাকা তথ্য উল্লেখ করে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির জামিনের আবেদন খারিজ করেন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক।