মেমারি : সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যে টাকা উদ্ধারের ঘটনা দেখা গেছে একাধিক বার। কেন্দ্রীয় এজেন্সি মেশিন নিয়ে গিয়ে উদ্ধার করেছে বিপুল পরিমাণ টাকা। এবার এক অভিনব দৃশ্য দেখা গেল। গাঁজা মজুতের খবর পেয়ে অভিযানে গিয়ে বাড়ির ভিতরেই মিলল বেসমেন্ট। আর সেই বেসমেন্টের ভেতরে ব্যাগ ভর্তি টাকা। সেই টাকা গোনার জন্য নিয়ে আসা হল মেশিনও। উদ্ধার হল লক্ষ লক্ষ টাকা, ৪৭ কেজির বেশি গাঁজা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম সঙ্গীতা সাহানি। খবরের ভিত্তিতে মেমারির কৃষ্টি সিনেমা হলের পিছনের পাড়ায় অভিযান চালিয়ে এই মাদক চক্রের পর্দাফাঁস করল মেমারি থানার পুলিশ।


বাড়ির ভিতরেই সরু গলি। সেখানে ছাগল রাখা থাকে। আর কয়েক পা এগোতেই বড় বড় দু’টি বস্তাতে গাঁজা দেখতে পায় মেমারি থানার পুলিশ। যার আশেপাশে ছড়ানো ছাগলের খাওয়ার জন্যে গাছের পাতা। তা সরাতেই চোখে পড়ে একটি বেসমেন্টে। বেসমেন্টের উপরে লোহার ঢাকনা। ঢাকনা খুলতেই 'চক্ষু চড়কগাছ' হয়ে যায় পুলিশের। কারণ, সেখানে কালো রঙের বড় ব্যাগ থাক থাক করে সাজানো টাকার বান্ডিল। টাকা গুনতে খবর দেওয়া হয় একটি রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কে। ব্যাঙ্কের কর্মীর সঙ্গে নিয়ে আসা হয় টাকা গোনার মেশিন।


টাকার পাশাপাশি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় সাড়ে ৪৭ কেজি গাঁজা ও ৪১ লক্ষ ৮৭ হাজার ২৮০ টাকা। পুরো অভিযানটি ভিডিয়োগ্রাফি করে রেখেছে মেমারি থানার পুলিশ। বাড়িতে বিপুল পরিমাণ গাঁজা রাখার অভিযোগ সঙ্গীতা সাহানি নামে এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 



পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলা ১১টা নাগাদ পুলিশ ধৃতের বাড়ি রেইকি করে। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওসি (মেমারি) প্রীতম বিশ্বাসের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ ওই বাড়িতে হানা দেয়। দেড় কাটা জমির উপর দোতলা বাড়িটি সামনে দেখলে কিছু বোঝার উপায় নেই। কিন্তু বাড়ির ভিতর ৪০ বর্গফুটের গলি ও গলির মাঝে আবার ৪-৫টা ছাগল রয়েছে। গলির শেষ প্রান্তে দু’টি বস্তা, সেই বস্তা থেকে উদ্ধার হয় গাঁজা।


ঘটনা প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক ব্যানার্জি জানান, বাজেয়াপ্ত দু’টি বস্তার একটিতে বিভিন্ন গ্রামের ‘পুরিয়া’ ছিল। আরেকটিতে এক কেজি করে গাঁজা ছিল। দুপুরে গাঁজা ও টাকা উদ্ধার হয়। তারপরে ব্যাঙ্কের লোক টাকা গোনার যন্ত্র নিয়ে আসেন। সাড়ে ৩ ফুট লম্বা কালো রঙের ব্যাগে ৫০০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত রাখা ছিল। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে ব্যাঙ্ক কর্মীরা টাকা গুনেছেন।


জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাড়ি থেকে যেমন গাঁজা বিক্রি করা হত, তেমনি জেলাজুড়ে এখান থেকে গাঁজাও পাচার করা হত। এই চক্রে আরও কেউ জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কোথা থেকে গাঁজা আসত, কোথায় বিক্রি করা হত তা নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।