কমলকৃষ্ণ দে, মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনির্বাণ বিশ্বাস, পালসিট (পূর্ব বর্ধমান) : টোল প্লাজায় (Toll Plaza) গাড়ি আটকানোয় সাংসদের 'দাদাগিরি' ! বিতর্ক জড়ালেন বর্ধমান পূর্বের (Burdwan Purba) সাংসদ সুনীল মণ্ডল (MP Sunil Mondal)। টোল প্লাজার এক কর্মীর গলায় ধাক্কা মারা হয়েছে। ঘটনার ভাইরাল ভিডিও ঘিরে শোরগোল পড়ে গেছে। যদিও বিতর্কের মুখে সাংসদ সুনীল মণ্ডলের সাফাই, 'গাড়ি কিছুতেই না ছাড়ায় উত্তেজনার মুহূর্তে ধাক্কা দিয়েছি, আমি অনুতপ্ত'।


ঘটনাটা কী ?


পালসিট টোল প্লাজার ৬ নম্বর লেনের পাশে ভিআইপি লেন। মূলত দু'টো স্টপার লাগানো থাকে। যখন ভিভিআইপি মুভমেন্ট হয়, তখন সেই স্টপার সরিয়ে দেওয়া হয়। গতকালও সেখান দাঁড়িয়ে ডিউটি করছিলেন সেখানকার কর্মী উজ্জ্বল সিংহ সর্দার। তিনি জানান, 'একটা গাড়ি রানিং অবস্থায় এসে স্টপারে ধাক্কা মারে। স্টপারটা পড়ে যায়। ফলে, সেটি গাড়ির ভেতরে চলে যায়। আমি সাইড থেকে ছুটে আসি। স্টপার বের করার জন্য বলি, স্যার গাড়িটা একটু ব্যাক করুন। স্টপারটা সাইডে সরিয়ে নিই। এরপর গাড়ির পেছন থেকে একজন নেমে এসে আমাকে ধাক্কা মারেন। গালিগালাজ করেন।' 


তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় ইউনিয়নের ইনচার্জ ছুটে আসেন। তাঁরা বলেন, স্যার ভুল হয়ে গেছে। ও নতুন ছেলে, চেনে না। এমপি হোক, যা হোক বললে ছেড়ে দিতাম। কোনও অসুবিধা নেই।


এদিকে বিতর্কের মুখে সাংসদের সাফাই, 'কাল তাড়া ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর হাসপাতাল ওপেনিং ছিল। আমি দিল্লি থেকে ফিরছিলাম। এমনিতেই আমার দেরি হয়ে গেছিল। টোল প্লাজায় কোনও দিনই এভাবে আটকায় না। আর ওই ছেলেটা একেবারে অশিক্ষিত, ড্রিঙ্ক করেছিল বলে হয়তো এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। টোল প্লাজায় এক ধরনের ব্যবসা শুরু হয়ে গেছে। যাঁরা সাইড দিয়ে যান, প্রচুর গাড়ি, ভিআইপি লেন তো থাকার কথা। সে কিছুতেই ছাড়ছিল না। আমার দেরি হয়ে যাচ্ছিল। নিরাপত্তারক্ষী বারবার বলা সত্ত্বেও ছাড়ছে না। তখন নিরাপক্ষীকে বলি, তুই বস, আমি দেখছি। তখন হিট অফ দ্য মোমেন্টে বলেছি, আমাকে চিনতে পারছিস না ! ওকে একটি ধাক্কা দিয়েছি। অস্বীকার করছি না। মারতে উদ্যত হয়েছি, এধরনের কোনও ঘটনা আমার ব্যক্তিগত মতে, তখন মনে নেই। ১৫ বছরের এমএলএ-এমপি, মানে রাজনৈতিক জীবনে এই প্রথম একটা ঘটনা ঘটল। এর জন্য কাল থেকে সত্যি আমি খুবই দুঃখিত, মর্মাহত।'


যদিও মদ খেয়ে ডিউটি করার কথা অস্বীকার করে টোল প্লাজার ওই কর্মী বলেন, 'ডিউটি করতে এলে কেউ কোনওদিন মদ খেয়ে আসে ? ভুল বলেছেন। গাড়িতে সাংসদ বা কিছুই লেখা ছিল না।'