রাণা দাস, মঙ্গলকোট (পূর্ব বর্ধমান) : ব্রিজের দু'পাশ থেকে অবাধে লুঠ হচ্ছে বালি। অনুমতি ছাড়াই পাইপ লাইনের সাহায্যে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার বালি চুরি হয়ে যাচ্ছে অজন নদ থেকে। এনিয়ে ভূমি রাজস্ব দফতর FIR করলেও, তাতে পুলিশের হেল দোল নেই বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির তরফে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। মহকুমা শাসকের বক্তব্য, তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছেন। 


মঙ্গলকোটে অজয় নদের ওপরে রয়েছে লোচনদা সেতু। যা বর্ধমান-বীরভূমের সংযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ। এই ব্রিজের দু'পাশ থেকেই অবাধে বালি চুরি যাচ্ছে। ব্রিজে ওঠার মুখে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ নাকা চেকিং করে। তবে, তাদের চোখের সামনে এসব বালি চুরি ধরা পড়ে না বলে অভিযোগ। ভূমি রাজস্ব আধিকারিক রাহুল ঘোষের বক্তব্য, এইসব বালির ঘাট অবৈধ। এনিয়ে মাসখানেক আগে মঙ্গলকট থানায় এফআইআর করা হয়েছে অবৈধ বালিঘাটের বিরুদ্ধে। কিন্তু, পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে তাঁদের কিছু করার নেই। 


মঙ্গলকোটের নতুন হাটের দিক থেকে কাটোয়ার দিকে অজয় নদ জুড়ে শুধুই দেখা যাবে পাইপ লাইন। আর এই পাইপ লাই দিয়ে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার বালি পাচার হয়ে যাচ্ছে। বিজেপির অভিযোগ, মঙ্গলচণ্ডী ঘাটে পুলিশ প্রশাসন ও তৃণমূলের মদতেই এই বালি পাচার চলছে। 


যদিও মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীর বক্তব্য, এই অবৈধ বালি খাদানের সঙ্গে তৃণমূলের কেউ যুক্ত নেই। বিজেপি নোংরা রাজনীতি করছে। পুলিশ আইনত ব্যবস্থা নিক। 


অন্যদিকে পুলিশ সুপার আমন দীপ জানিয়েছেন, অবৈধভাবে বালি তুললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সাম্প্রতিক সময়ে একইরকম ছবি ধরা পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনাতেও। হাইড্রোলিক মেশিন বসিয়ে দিনে-রাতে বিদ্যাধরী নদী (Bidyadhari River) থেকে চুরি করে নেওয়া হচ্ছে নদীগর্ভস্থ বালি। ফলে, এলাকায় ভূমিধসের (Landslide) আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই সাদা বালি নদী থেকে তুলে ট্রাকের মাধ্যমে শহরাঞ্চলে পাঠানোর পাশাপাশি ইটভাটাতেও বিক্রি করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যাধরী নদী থেকে বালি চুরি বন্ধ করা হোক, এই মর্মে প্রশাসনিক দফতরে অভিযোগ দায়ের করেছন এলাকাবাসী। নদী থেকে বালি চুরি করায় তৃণমূলের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের আশ্বাস দেয় ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর। 


আরও পড়ুন ; মেশিন বসিয়ে বিদ্যাধরী নদীগর্ভস্থ বালি চুরি মাফিয়াদের ! সন্দেশখালিতে ভূমিধসের আশঙ্কা