রাণা দাস এবং কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: স্বাস্থ্যসাথীর উপভোক্তাকে নিয়ে গিয়ে বায়োমেট্রিক করিয়ে স্বাস্থসাথীর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল বর্ধমানের এক নার্সিংহোমে। ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে বায়োমেট্রিক করিয়ে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। বর্ধমানের মিডভিউ নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে উঠেছে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে খবর, কাটোয়ার গাফুলিয়ার প্রায় ৫০ জন স্বাস্থ্যসাথীর উপভোক্তাকে ভুল বুঝিয়ে ওই নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে বায়োমেট্রিক করানো হয়। তারপর সেই নথি দেখিয়ে স্বাস্থ্যসাথীর লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বিনিময়ে স্বাস্থ্যসাথীর উপভোক্তাদের ১০হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যসাথীর উপভোক্তার একাংশের অভিযোগ, ১০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও সেই টাকা পাননি। কাটোয়ার গাফুলিয়ার বাসিন্দা রাজিয়া বিবি জানান যে, তাঁদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে থেকে ৭০-৮০ হাজার টাকা করে কাটা হয়েছে।কাউকে দেখানো হয়েছে অ্যাপেনডিক্স, গলব্লাডারের অপারেশন। অনেক টাকা কটা হয়েছে। টাকা পাওয়ার কথা ছিল দেয়নি।
এরপরই কাটোয়া থানার পুলিশ তদন্তে নেমে সাহেলা বিবি নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত নার্সিংহোমের এজেন্টের কাজ করত। তাঁর জামাই নুরুল হাসান ওই নার্সিংহোমের কর্মী। তাঁকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, যেহেতু স্বাস্থ্যসাথীর টাকা নার্সিংহোমের অ্যাকাউন্টে পড়ে, ফলে কর্তৃপক্ষের কেউ কেউ এই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। উঠে আসছে চিকিৎসকদের নামও।
পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস বলেন, "ভুল বুঝিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করা অভিযোগ ওঠে। আমরা আরও তদন্ত করছি।" অন্যদিকে, মিডভিউ নার্সিংহোমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবির গুহ বলেন, "আমরা জানতে পেরেছি একজন ধরা এরকম দুর্নীতি হয়ে থাকলে ধরা পড়বে পুলিশ তদন্ত করুক।" এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার নার্সিংহোমে তল্লাশির সময় বেশ কিছু স্বাস্থ্যসাথীর উদ্ধার করা হয়েছে। এই কার্ডগুলি কোথা থেকে এল খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ও বেশ কিছু নথি।