রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান শহরে প্রকাশ্য রাস্তায় নৃশংসভাবে খুন করা হল প্রতিবাদী তৃণমূলকর্মীকে। পরিবারের দাবি, এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপের প্রতিবাদ করায় তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনীতির তরজা। নেপথ্যে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। ব্যক্তিগত শত্রুতা, দলের যোগ নেই- পাল্টা দাবি করেছে তৃণমূল।
নিহতের মাম ন্দিরা মহন্ত বলছেন, 'পুরনো শত্রুতা, ও থাকাকালীন কোনও খারাপ কাজ করতে দেবে না বলেছিল'। রাস্তায় পড়ে চাপ চাপ রক্ত! পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে একের পর এক গাড়ি। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার গভীর রাতে, এখানেই নির্মমভাবে খুন করা হয় স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীকে! বর্ধমান শহরের ব্য়স্ততম এলাকায় প্রকাশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘিরে আতঙ্কিত এলাকার মানুষ!
কোথায় কোথায় একই ঘটনা?
ক্যানিং- ২৫.০৮.২৩সোনারপুর- ১৯.১২.২৩বর্ধমান- শনিবার ২৩.১২.২৩
ক্যানিং, সোনারপুরের পর এবার বর্ধমান শহর। অসামাজিক কার্যকলাপের প্রতিবাদের মাশুল গুনতে হল প্রাণ দিয়ে! মৃত শুভাশিস মহন্ত ওরফে কার্তিকের (৪৮) বাড়ি বর্ধমান শহরের ইছলাবাদে। নিহতের পরিবার সূত্রে দাবি, শনিবার রাতে এলাকার একটি হোটেল থেকে খাবার নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ওই তৃণমূল কর্মী। অভিযোগ, সেই সময় শঙ্কর ঘোষ নামে এক দুষকৃতী তাঁকে পেছন থেকে রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। পাশাপাশি কানে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় স্ক্রু ড্রাইভার। আক্রান্ত রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে গেলে ছুরি দিয়ে কেটে দেওয়া হয় তাঁর হাতের শিরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান হাসপাতালে আনা হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
নিহতের মা মন্দিরা মহন্ত আরও বলছেন, 'ওকে পিছন থেকে মাথায় মারে। সুযোগে ছিল, সেই পুরনো হিসাব। পড়ে যায় যখন তখন মাথা থেকে রক্ত বের হয়। কানের মধ্যে কীসব দিয়ে, ওই সকরু ড্রাইভারের মতো খুঁচিয়েছে। তখন ওর খুব যন্ত্রণা হচ্ছে, খুব কষ্ট হচ্ছে। তখন ও একেবারে অজ্ঞানের মতো...সেন্সলেসের মতো হয়ে গেছে। তবুও ওর হাতের শিরাটা কেটে দিয়েছে'।
নিহতের এক বন্ধু দাবি করেছেন, খুনের পর নাকি অভিযুক্ত শঙ্কর ঘোষ তাঁকে ফোন করে বদলা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। বলছেন, ঘটনার পর শঙ্কর ঘোষ ফোন করে জানায়, দেখলি তো কীভাবে ওকে ঘরে ঢুকিয়ে দেখলাম। কিন্তু কে এই শঙ্কর ঘোষ? স্থানীয় সূত্রে খবর, অভিযুক্ত এলাকার একাধিক সমাজবিরোধী কাজের সঙ্গে জড়িত। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত।
পূর্ব বর্ধমানের বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রের অভিযোগ, ভাল করে খোঁজ নিয়ে দেখুন, এর পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূল নেতা প্রসেনজিৎ দাস বলছেন, দলের যোগ নেই, ব্যক্তিগত কোনও কারণ রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে'। নিহতের মায়ের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে বর্ধমান থানা।