কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান : দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে বর্ধমানের (Burdwan) জেলা পার্টি অফিসের সামনে হাতাহাতিতে জড়ালেন বিজেপি কর্মীরা (BJP Workers)। সকালে একদল বিজেপি কর্মী পতাকা হাতে নিয়ে জেলা পার্টি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন। জেলা বিজেপির বহিষ্কৃত সহ সভাপতি শ্যামল রায়কে দলে ফেরানোর দাবিতে সরব হন বিজেপি কর্মীরা। এর পাশাপাশি বিজেপি জেলা সভাপতি ও যুব মোর্চার জেলা সভাপতির অপসারণও দাবি করেন বিক্ষুব্ধরা।
এরপর বিজেপি যুব মোর্চার জেলা সভাপতি পিন্টু সাম অফিসে উপস্থিত হয়ে তালা ভেঙে দেন। এরপরই দু’পক্ষের হাতাহাতি বেধে যায়। বিক্ষুব্ধদের বসার অস্থায়ী ছাউনি ভাঙচুর করা হয়। পরে যুব মোর্চার জেলা সভাপতির নেতৃত্বে এলাকায় মিছিল করেন বিজেপি কর্মীরা। বিজেপি নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
বিজেপিতে ফাটল!
'দীর্ঘদিন ধরেই মনে হচ্ছিল, আমাদেরকে পার্টির এই মুহূর্তে আর প্রয়োজন নেই, তাই সসম্মানে পার্টি থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। আজ পার্টির অসম্পদ আমরা, তাই সম্পদ যখন হব, আবার দেখা হবে তখন।' দিনকয়েক আগে চিঠিটি লেখেন বিজেপির বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি (তৎকালীন) শ্য়ামল রায়।
দলের জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে পদ ছাড়ার জন্য় আবেদন জানান তিনি। তিনি বলেন, 'আমরা এখন দলের অসম্পদ। আমাকে দলের এখন প্রয়োজন নেই। এটা সাংসদের কথা। সভাপতির কথা। দলের ৪ শতাংশ যখন তখন এসেছিলাম। ৩৮ শতাংশ তখন চলে গেলাম। সিপিএমকে শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। তারাই এখন দলে গুরুদায়িত্বে। ভাবলাম এখানেই শেষ করি। সসম্মানে বেরিয়ে যাচ্ছি।'
ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতার অভিযোগ ছিল মূলত বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অভিজিৎ তা ও বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ এস এস অহলুওয়ালিয়ার বিরুদ্ধে।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে, এই ঘটনায় প্রকাশ্য়ে চলে আসে বিজেপির ফাটল। যা নিয়ে আক্রমণ শানাতে ছাড়েনি তৃণমূল। জেলা তৃণমূলে কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেছিলেন, 'এটা বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। সাগরদিঘি উপনির্বাচনের পর সিপিএম বিজেপি যে একত্রিত হয়ে গেছে একথা আমরা বারংবার বলেছি। সে কথাই বিজেপি জেলা সহসভাপতি শ্যামল রায় বলছেন। সাংসদ যে কোনও কাজ করেন না, মানুষ পরিষেবা পায় না একথাও আমরা বলে আসছি । শ্যামল রায় সে কথাই বলছেন।'
দলীয় নেতার অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য় করতে চাননি বিজেপির বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি।
এপ্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ এস এস অহলুওয়ালিয়া বলেছিলেন,সংগঠনের কে সভাপতি হবেন, কে সম্পাদক হবেন এটা দেখা সাংসদের কাজ নয়। তবে বিজেপিতে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।
আরও পড়ুন ; বিজেপি পার্টি অফিসে তালা মেরে, পতাকা ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ, তপ্ত কোচবিহার