বিটন চক্রবর্তী, মানস জানা, হলদিয়া: কয়েকদিন আগেই পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায় ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের রিফাইনারিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিনজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আগুনে পুড়ে জখম হয়েছেন ৪৪ জন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে গ্রিন করিডর করে হলদিয়া থেকে কলকাতায় আনা হয়েছে। আর এই দুর্ঘটনার পরই জোরাল হয়েছে পুরনো প্রশ্ন। পূর্ব মেদিনীপুরের এতবড় হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে আজ পর্যন্ত একটা ট্রমা কেয়ার সেন্টার চালু হল না কেন? দুর্ঘটনার পর জীবন বাঁচাতে যখন সময়ের সঙ্গে লড়াই, তখন একজনকে গ্রিন করিডর করে কলকাতা নিয়ে যেতে হবে কেন? কেন শিল্পাঞ্চলে আপৎকালীন চিকিৎসা পরিকাঠামো থাকবে না?
অথচ ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই হলদিয়াতেই ট্রমা কেয়ার সেন্টারের উদ্বোধন করেছিলেন তমলুকের তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী, যিনি এখন বিজেপিতে। হলদিয়ার সিটি সেন্টার এলাকায় ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে ২০০ মিটার ভিতরে রয়েছে এই ট্রমা কেয়ার সেন্টার। স্থানীয় সূত্রে খবর, ভবন তৈরির কাজ শেষ হয়েছে ২০১৭ সালে। কিন্তু তারপরেও পিপিপি মডেলে ৫০ বেডের ট্রমা কেয়ার সেন্টার চালু হয়নি। এই সময়ের মধ্যে হলদিয়ার একাধিক সংস্থার কারখানায় দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে।
শিলান্যাসের পর প্রায় ৮ বছর হতে চলল। ট্রমা কেয়ার সেন্টার চালু না হওয়ায় শাসক শিবিরকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সম্পাদক নবারুণ নায়েকের অভিযোগ, ‘বর্তমান সরকারের আমলে কিছুই কাজ হয়নি। এরা শ্রমিক স্বার্থ দেখে না।’
বিজেপি-র এই অভিযোগে অবশ্য আমল দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতা সাধন জানা বলেছেন, ‘আমরা দ্রুত ট্রমা কেয়ার সেন্টার চালুর চেষ্টা করছি। ১০ শতাংশ কাজ বাকি আছে। বিজেপির কথায় গুরুত্ব দেব না।’
দ্রুত কাজ শেষ করার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের সিইও পি হরিশঙ্কর বলেছেন, ‘এটা একটা হাসপাতাল। পরিকাঠামো তৈরি করতে একটু সময় লাগবে। ১০ শতাংশ কাজ বাকি আছে। ২০১৯ সালে একটা সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুত চালুর চষ্টা চলছে।’
কতদিনে ট্রমা কেয়ার সেন্টার চালু হয়, সেটাই দেখার।