সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দমকলের পর রাজ্যে ফের নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ। এবার তমলুক-ঘাটাল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। আদালতে জমা দেওয়া অতিরিক্ত হলফনামায় বিস্ফোরক অভিযোগ মামলাকারীদের। তমলুক-ঘাটাল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ।


হলফনামায় কী উল্লেখ:
অতিরিক্ত হলফনামায় উল্লেখ, সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়ের ঘনিষ্ঠের বোন, পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur) জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি প্রয়াত দেবব্রত দাসের ভাইপো, ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান গোপালচন্দ্র মাইতির ভাইপো, ব্যাঙ্কের তত্কালীন ভারপ্রাপ্ত সিইও প্রণয়কুমার চক্রবর্তীর ভাইপো-সহ ব্যাঙ্কের কর্তাব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রাও কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে চাকরি (Job) পেয়েছেন। ৫২টি শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত ১৩৪ জন নিযুক্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ। আবেদন না করে এবং মেধাতালিকায় নাম না থাকা সত্ত্বেও অনেকে চাকরি পেয়েছেন বলে মামলাকারীদের দাবি। 

২০২১ সালে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে, অতিরিক্ত হলফনামা দাখিল করে নতুন অভিযোগ জানানো হয়েছে। হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, কো-অপারেটিভ সার্ভিস কমিশনকে বাদ দিয়েই, ২ দফায় তমলুক-ঘাটাল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কে নিয়োগে অনুমোদন দেন মন্ত্রী অরূপ রায়। যা নিয়ম বিরুদ্ধ বলে দাবি মামলাকারীদের। স্বজনপোষণের অভিযোগ তো রয়েইছে। পাশাপাশি অভিযোগ, এমন অনেকেই চাকরি পেয়েছেন, যাঁরা আবেদনই করেননি। অভিযোগ, সমবায়ে ৫২টি শূন্যপদ থাকলেও, নিয়োগ হয়েছে ১৩৪ জনের। 


অভিযোগ অস্বীকার:
সমবায়ে নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপোষণের অভিযোগ রয়েছে সুনির্দিষ্ট করে। মন্ত্রী অরূপ রায়ের ঘনিষ্ঠের বোন-সহ সমবায় ব্যাঙ্কের একাধিক পদাধিকারীর পরিবারের সদস্যকে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, 'আমি কোনওক্ষেত্রেই এমন রেকমেন্ডেশন দিইনি, মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ, এটাকে কোনও গুরুত্ব দিতে চাই না আমি। এনকোয়ারি হবে, তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'


পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে অনুব্রত মণ্ডল। দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হেফাজতে অনুব্রত মণ্ডল। এবার সমবায়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়াল অরূপ রায়ের। একের পর এক দুর্নীতি মামলায় তৃণমূলের হেভিওয়েটদের নাম জড়ানোয়, সুর চড়িয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বারবার দুর্নীতির অভিযোগ এবং তাতে তৃণমূলের নেতা-বিধায়ক-মন্ত্রীদের নাম জড়ানোয় শাসক দলকেই নিশানা করছে বিরোধী দলগুলি।

আরও পড়ুন: 'আমার আমলে দুর্নীতি হয়নি', কলকাতায় ফিরে দাবি এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যানের