ঋত্বিক প্রধান, কাঁথি (পূর্ব মেদিনীপুর): বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকারের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ (Antibiotic) মিলছে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের (Contai Sub Division Hospital) বহির্বিভাগে। সেখানে রোগীদের দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। অভিযোগ উঠেছে এমনটাই।
বিভিন্ন রোগীদের মধ্যে 'সেফ্রাডিন-৫০০' নামে ওষুধ দান
গুরুতর অভিযোগ উঠল কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের বিরুদ্ধে। সেখানে নাকি বেশ কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন রোগীদের 'সেফ্রাডিন-৫০০' নামে একটি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বহির্বিভাগ হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
অথচ এই ওষুধ বাংলাদেশের। এবং সেই ওষুধের গায়ে বাংলাদেশ সরকারের তরফে 'ক্রয়-বিক্রয় করা নিষিদ্ধ' বলে উল্লেখ করা রয়েছে। ওষুধের গায়ে পরিষ্কার লেখা, 'গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সম্পদ। ক্রয়-বিক্রয় আইনত দণ্ডনীয়।'
তাহলে এমন ওষুধ কাঁথিতে এসে পৌঁছল কীভাবে? এই রাজ্যে রোগীদের হাতে কীভাবে সেই ওষুধ গিয়ে পৌঁছল? এই নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে চিকিৎসক মহলে। বিষয়টি জানাজানি হতেই তদন্তের নির্দেশ দিল নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা দফতর।
গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য
ঘটনার সূত্রপাত হয় মঙ্গলবার সকালে। এদিন কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের বহির্বিভাগে বেশ কয়েকজন রোগীর প্রেসক্রিপশনে 'সেফ্রাডিন-৫০০' নামক ওষুধের সুপারিশ করেন চিকিৎসকেরা। এরপর হাসপাতালের বহির্বিভাগের ওষুধ কাউন্টার থেকে রোগীর পরিবারের লোকেদের সেই ওষুধ সরবরাহ করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। বেশ কয়েকজন রোগীর দাবি, ক্যাপসুলের মোড়কের ওপরে বাংলাদেশ সরকারের কথা লেখা রয়েছে। তাঁদের আরও দাবি যে, সেই ওষুধ কোনওভাবে ক্রয় ও বিক্রয় করা নিষিদ্ধ বলেও মোড়কের ওপরে লেখা রয়েছে। এরপরেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বেশ কয়েকজন রোগী।
আরও পড়ুন: Jadavpur University: ‘ঘৃণার আগুনে পুড়িয়ে মারব’, SFI নেতার ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক যাদবপুরে
প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশে যে ওষুধ কেনাবেচা করা নিষিদ্ধ, সেই ওষুধ এই রাজ্যে এল কোন পথে? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলছেন, 'স্বাস্থ্য দফতরের সিএমটি (সেন্ট্রাল মেডিকেল টিম) থেকে সেফ্রাডিন পাঠানো হয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। এরপর পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলার ডিআরএস বিভাগ থেকে ওষুধ কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের বহির্বিভাগে সরবরাহ করা হয়েছিল।'
যে ওষুধ বাংলাদেশের বাইরে কোনওভাবে রোগীকে দেওয়া যাবে না বলে স্পষ্ট উল্লেখ করা রয়েছে সেই নিষিদ্ধ ওষুধ এ রাজ্যে কীভাবে সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীদের বিলি করা হচ্ছে, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। এমনকী এই ওষুধ এই রাজ্যে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের ছাড়পত্র রয়েছে কি না তাও স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানানো সম্ভব হয়নি। যদিও এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্য শঙ্কর ষড়ঙ্গী বলেন, 'ডেপুটি সিএমওএইচ (তৃতীয়) এবং এসিএমওএইচ পদমর্যাদার দু'জন স্বাস্থ্য আধিকারিকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। কীভাবে এই ওষুধ হাসপাতালের বহির্বিভাগে এসেছে এবং ওষুধ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কোনও ছাড় পত্র রয়েছে কি না সবকিছুই তারা খতিয়ে দেখবেন।'