কাঁথি: প্রকাশ্য মঞ্চে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম শিশির অধিকারীকে, তাঁকে 'গুরুদেব' বলেও উল্লেখ, তার জেরে এবার তৃণমূলের কোপে পড়লেন কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সুবল মান্না। আগে শোকজ করা হলেও, এবার সরাসরি সুবলকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে বলে খবর। সেই নিয়ে এবার প্রতিক্রিয়া জানালেন সুবল। তাঁর দাবি, আগে অনেক বার পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। আবারও পরীক্ষা দিতে হবে। (Subal Manna)


বুধবার এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হন সুবল। পদত্যাগের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, "এখনও কোনও চিঠি পাইনি আমি। চিঠি পেলে তার উত্তর দেব। নির্দেশ পেলে সেই মতো ব্যবস্থা নেব। আমি দলের অনুগত সৈনিক। অনেক পরীক্ষা দিয়েছি। আবার দিতে হবে। আমাদের হিন্দুদের সংস্কৃতি পায়ে হাত দিয়ে প্রমাণ করা, তাতে যদি দল অসম্মানিত হয়ে থাকে, দলের কাছে ক্ষমা চাইছি আমি।" (Sisir Adhikari)


সম্প্রতি কাঁথিতে একটি বেসরকারি স্কুলের অনুষ্ঠানমঞ্চে একই সঙ্গে দেখা যায় সুবল এবং শিশিরকে। সেখানে পায়ে হাত দিয়ে শিশিরকে প্রণাম করেন সুবল। বক্তৃতা করার সময় শিশিরকে 'গুরুদেব' বলে সম্বোধনও করেন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "বাবা-মা জন্ম দিয়েছেন। পথচলা, আজ যে জায়গায় এসে পৌঁছেছি...পূজ্যপদ গুরুদেব এখানে রয়েছেন। তাঁকে আমার প্রণাম। মাননীয় শিশির অধিকারীকে।"


আরও পড়ুন: Sisir Adhikari Subal Manna : শিশিরকে প্রণামের শাস্তি? সুবল মান্নাকে ইস্তফার নির্দেশ দিল তৃণমূল


সেই ভিডিও সামনে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়। তৃণমূলের অন্দরেই রোষের মুখে পড়েন সুবল। বুধবার দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষও তাঁকে ভর্ৎসনা করেন। কুণাল বলেন বলেন,"কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান যেভাবে বিশ্বাসঘাতক শিশির অধিকারীকে প্রণাম করে, গুরুদেব বলে তাঁর ভজন গেয়েছেন, তা তৃণমূল কর্মীরা ভাল ভাবে নেননি। শীর্ষ নেতৃত্ব কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন। ওঁকে ইস্তফা দিতে বলা হচ্ছে।" কুণালের মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া করতে চাইলে সুবল বলেন, "কারও কোনও মন্তব্য নিয়ে কিছু বলার নেই আমার।"


২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে টানাপোড়েন অধিকারী পরিবার। এমনকি শিশিরকে নিয়েও বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। প্রকাশ্য়ে অমিত শাহের মঞ্চে দেখা গেলেও, তৃণমূলের সাংসদ পদ কেন ধরে রেখেছেন, উঠেছে প্রশ্ন। এমনকি শিশিরের সাংসদপদ বাতিলের দাবিতেও আবেদন জানিয়েছে তৃণমূল। সেই শিশিরের স্তূতির জন্যই এবার দলের বিরাগভাজন হলেন সুবল। এ নিয়ে শিশিরের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি যদিও। তবে বিজেপি নেতা সজল ঘোষের দাবি, বর্ষীয়ান কারও পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলে যদি রোষে পড়তে হয়, তাহলে অমন দল থেকে বেরিয়ে আসাই উচিত।