বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: জমি-বিবাদের জেরে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের রঙ্গিবসান গ্রামে দুটি পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠল গ্রামের পল্লি কমিটির মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। ওই দুটি পরিবারের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ রাখলে, আর্থিক জরিমানার ফরমান জারি করে গ্রামে পোস্টারও লাগানো হয়েছে। অভিযোগকারীদের দাবি, পল্লি কমিটির মাতব্বররা তৃণমূলের। অভিযোগকারীরা বিজেপি করায়, তাঁদের একঘরে করে রাখা হয়েছে। এমনকি, পোস্টার লাগিয়ে রীতিমতো হুমকি দেওয়া হয়েছে, গ্রামে শীতলা পুজোর ভোগ, প্রসাদও ওই দুটি পরিবারকে দেওয়া যাবে না, কেউ সামাজিক যোগাযোগ রাখলে, অর্থদণ্ড হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে পল্লি কমিটি। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পল্লি কমিটির সদস্য তথা তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। সুরাহা পেতে মহিষাদল থানার দ্বারস্থ হয়েছে ভুক্তভোগী দুই পরিবার।
কী রয়েছে পোস্টারে?
পোস্টারে রীতিমতো হুমকি দেওয়া হয়েছে, গ্রামে শীতলা পুজোর ভোগ, প্রসাদও ওই দুই পরিবারকে দেওয়া যাবে না, কেউ সামাজিক যোগাযোগ রাখলে, তাঁকে আর্থিক জরিমানাও করা হবে। পোস্টারের নীচে রয়েছে গ্রাম পল্লি কমিটির নাম।
অভিযোগকারী স্বরূপ ঘোড়ুইয়ের দাবি, তাঁদের চাষের জমি জোর জবরদস্তি জবর দখল করে নেয় পল্লি কমিটি। তিনি বলেন, 'আমি বিজেপি করি। পল্লিবাসী জোর করে জমি জবরদখল করে রেখেছিল। সেটা নিয়ে থানা পুলিশ করেছিলাম। প্রশাসনিক হেল্প পেয়েছিলাম। তাই চাষযোগ্য় জমিতে চাষ করতে দেয় না। জরিমানা করেছিল ১ লক্ষ টাকা। আমার অপরাধ নিজেও জানি না।'
গোটা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রঙ্গীবসান পল্লি কমিটির সদস্য এবং তৃণমূল নেতা সুকুমার পাত্র। তিনি বলেন, 'রাতের অন্ধকারে বদমায়েসি করে এটা করেছে। আমরা থানায় জানিয়েছি। একঘরে কোনও কিছু না। চাঁদা চাওয়া হয়েছিল। দেয়নি। অপপ্রচারের চেষ্টা। ওঁরা সার্ভে করেছে। পল্লির সবাইকে নিয়ে সংগঠন। এখানে কোনও রাজনৈতিক ভেদ নেই।'
শুরু রাজনৈতিক তরজা:
মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, 'এটা কি পল্লি কমিটি করেছে? না রাতের অন্ধকারে কেউ করেছে ? কাল বিরোধী দলনেতা এসেছিল না কাছাকাছি, যত নির্বাচন আসবে, তত এই চটকদারি, সংবাদ মাধ্যমের সামনে আসার জন্য এই চক্রান্ত। কেউ চাঁদা দেয়, কেউ দেয় না। এর মানে এই নয় রাজনৈতিক দল করে বলে। বাজার গরম করা।' বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য প্রদীপ দাস বলেন, 'এই কমিটি পরিবারের একটা জায়গাকে বেদখল করে রেখেছিল। কিছু শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের সাহায্য আইনের সহায়তায় সেই জায়গা ফিরিয়ে দিতে পেরেছিলাম। যাতে কেউ চাষবাস করতে না পারে, তাই ট্রাক্টর বন্ধ করে দিয়েছিল। চকবেড়িয়ায় খাপ পঞ্চায়েত দেখেছিলাম। এটারও প্রতিবাদ হওয়া উচিত। বিজেপি করে এটাই অপরাধ। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় সামাজিক বয়কট করছে। প্রশাসনকে বলব ব্য়বস্থা নিতে।'
আরও পড়ুন: '১ হাজার কোটি টাকার নোট বদল করেছেন, তালিকা আছে', হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর