ঋত্বিক প্রধান, কাঁথি : কাঁথিতে ঘরছাড়া বিজেপি সমর্থক ১৬টি পরিবারকে ঘরে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করল দল। গতকাল এই নিয়ে মারিশদা থানায় পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপি নেত্রী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। বিজেপির অধীনে থাকা বিধানসভা কেন্দ্রে, বিজেপি সমর্থকরাই ঘরছাড়া কেন ? পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।


বিধায়ক বিজেপির। অথচ সেই বিধানসভা কেন্দ্রেই প্রায় এক বছর ধরে ঘরছাড়া বিজেপি সমর্থক ১৬টি পরিবার। অবশেষে পুলিশের সহযোগিতায়, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে ঘরছাড়া সেই সমস্ত পরিবারের সদস্যদের ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করল গেরুয়া শিবির।


ভোট পরবর্তী অশান্তির জের-


গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের থেকে কাঁথি উত্তর কেন্দ্রটি ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। কিন্তু অভিযোগ, ভোট পরবর্তী অশান্তির জেরে ওই বিধানসভা কেন্দ্রের কাঁথি ৩ নম্বর ব্লকের বিজেপি সমর্থক ১৬টি পরিবারের সদস্যরা ঘরছাড়া রয়েছেন। ঘরছাড়া এক বিজেপি কর্মী বলেন, বিধানসভা ভোটের আগে যখন শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেন, তখন আমি বিজেপির পক্ষে জয় শ্রীরাম বলেছিলাম। তারপর থেকেই তৃণমূল আমাকে টার্গেট করে এবং বিধানসভা ভোটের পর স্থানীয় নেতৃত্ব গুন্ডাবাহিনী দিয়ে আমার বাড়িতে লুঠপাট চালায়। প্রাণে মারার চেষ্টা করা হয়, তখন পরিবারকে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যাই।


এদিন ঘরছাড়া পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মারিশদা থানায় যান বিজেপির রাজ্য সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। পুলিশের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, শনিবার থেকে ১৬টি পরিবারের সদস্যদের ঘরে ফেরানোর কাজ শুরু হবে। 


প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল বলেন, এর আগেও ভূপতিনগরে বাড়ি ফিরলেও বের করে দেওয়া হয়েছিল। এবারও তেমন হলে আন্দোলন হবে। বাড়ি ফেরার পরে সম্পূর্ণ নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে প্রশাসনকে। ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তা দেওয়া যায়, তা আমরা সুনিশ্চিত করব।


ঘরছাড়া থাকার পিছনে তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছে বিজেপি। উল্টোদিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে, বিজেপির বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁদেরই দলের সমর্থকরা ঘরছাড়া কেন ? 


কাঁথি সংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তরুণকুমার মাইতি বলেন, পূর্ব মেদিনীপুরে যেখানে ওদের বিধায়ক, সেখানেই ওদের কর্মীরা ঘরছাড়া রয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে গন্ডগোল পাকাচ্ছেন। বরং ওই সমস্ত এলাকায়, আমাদের বেশি কর্মী ঘরছাড়া। আমাদের চেষ্টা তাঁদের ঘরে ফিরিয়েছি। উল্টো রাজনীতি খেলছেন, এতে লাভ কিছু হবে না।


কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে, ভোট পরবর্তী অশান্তির তদন্ত করছে CBI ও রাজ্য সরকারের SIT। কাঁথির বিজেপি সমর্থকরা ঘরে ফিরে কি এবার নির্বিঘ্নে থাকতে পারবেন? সেটাই এখন দেখার।