বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: এবার নন্দীগ্রাম (Nandigram) তৃণমূলের মধ্য়েও কি বিরোধের সুর? হাইমাদ্রাসার পরিচালন সমিতির ভোট ঘিরে দ্বন্দ্বে তৃণমূলের (TMC) দুই শিবিরের মধ্যে। টানাপড়েন শুরু হয়েছে তৃণমূলের ব্লক কমিটি ও অঞ্চল কমিটির মধ্যে। দুটি শিবিরের তরফে আলাদা করে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। তার ফলেই শুরু হয়েছে জল্পনা। 


রবিবার নন্দীগ্রামের দাউদপুর হাইমাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নির্বাচন রয়েছে। সেখানেই নির্বাচন ঘিরে মুখোমুখি লড়াইয়ে তৃণমূলের দুই শিবির! একদিকে তৃণমূলের ব্লক কমিটি, অন্যদিকে তৃণমূলের অঞ্চল কমিটি। গত মঙ্গলবার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। কিন্তু দেখা গিয়েছে প্রার্থীদের যা প্যানেল, তাতে দুই শিবিরই নিজেদের মতো করে প্রার্থীপদে অনড় থেকেছে। ফলে তৃণমূলের প্রার্থীরা মুখোমুখি লড়াই করবেন। এখন যা পরিস্থিতি তাতে হাইমাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নির্বাচন হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল বনাম তৃণমূলের লড়াই! 


তৃণমূলের খোঁচা:
তমলুক (Tamluk) সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান পীযূষ ভুঁইয়া বলেন, 'দাউদপুর অঞ্চলের জনপ্রিয় নেতা সামশুল ইসলাম। তাঁর উদ্যোগে ৬ জনের একটি প্যানেল জমা পড়েছে। সেটার অনুমোদন আছে। আর ব্লকগত ভাবে দিতে গেলে জেলার অনুমোদন লাগে। আমরা আর কাউকে অনুমোদন দিইনি।' অন্যদিকে দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূলের সহ সভাপতি সানোয়ার খান। তিনি বলেন, 'অঞ্চল থেকে আলাদা কেউ প্যানেল জমা দিলে সেটা সে ব্যক্তিগতভাবে দিয়েছে ব্লকের অনুমোদন নেই। দলের মধ্যে দুটো ভাগ হলে সমস্যা তো হবেই। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তো আছেই। জেলা বা রাজ্য নেতৃত্ব তা মেটাতে উদাসীন।' যদিও তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রের দাবি, 'আমার কাছ থেকে প্যানেলের জন্য কেউ অনুমোদন নেয়নি। রাজ্যের নির্দেশে দুই শিবিরের সাথে কথা বলে একটি তালিকা প্রস্তুত করে লিফলেট আকারে তা জানিয়ে ভোট হবে। সানোয়ার যে অভিযোগ করেছে তা ঠিক নয়। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই, হয়তো মতান্তর আছে। তা মিটে যাবে।' যদিও মাদ্রাসার ভোটে আলাদা আলাদা ভাবে নিজেদের প্রার্থীর জন্য প্রচার চালাচ্ছে তৃণমূলের ব্লক ও অঞ্চল শিবির। অন্যদিকে ২০০৭ সালে নন্দীগ্রামকাণ্ডের পর এই প্রথম এলাকার স্কুল ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে সিপিএম।


বিজেপির কটাক্ষ:
নন্দীগ্রাম রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কেন্দ্র। গোটা ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়েছে বিজেপি (BJP)। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য অভিজিৎ মাইতি বলেন, 'এদের যা অবস্থা এক গোষ্ঠী আরেক গোষ্ঠীকে চাপছে। সাধারণ মানুষ পঞ্চায়েত ভোটে এদের জবাব দেবে।' 


আরও পড়ুন: ফের ১০০ দিনের প্রকল্পে 'দুর্নীতি', অভিযোগ তৃণমূলকর্মীদেরই