ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর: এলাকায় তেল চুরি শুরু হয়েছে। চলছে মদের কারবার। বেআইনি মদ বিক্রির সঙ্গে জড়িয়ে তৃণমূলের (TMC) কয়েকজন পাণ্ডা। দলের একাংশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur News) পটাশপুর (Patashpur) এক নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি। তা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।
বিস্ফোরক তৃণমূল নেতা পীযূষকান্তি পণ্ডা
মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার পর এবার পীযূষকান্তি পণ্ডা। দলের একাংশের কাজকর্ম নিয়ে গুরুতর অভিযোগ করলেন পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি। পটাশপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি।
বুধবার প্রকাশ্য সভায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, "কিছুদিন আগে শুনলাম এখানে তেল চুরি শুরু হয়েছে। মদের কারবার শুরু হয়েছে। উচ্ছৃঙ্খল আচরণ শুরু হয়েছে। কেন? বেআইনি মদ বিক্রির যে পাণ্ডা এখানে আছে, আমাদের কিছু লোক জড়িয়ে আছে। পুলিশ পয়সা খাচ্ছে। পুলিশের লোক আছে, সোজাসুজি বলছি। এই যে কাজগুলো চলছে, এলাকায় তো ভাল হবে না। আমার আপনার মতো কর্মীরা যারা অভদ্র আচরণ করি গ্রামের মানুষের সঙ্গে, তাদের জন্য ভোটটা কমে।"
বুধবার বিকেলে পটাশপুরের গোয়ালদা বুথে তৃণমূলের নতুন পার্টি অফিসের উদ্বোধন হয়। সেই উপলক্ষ্যে আয়োজিত হয়েছিল সভা। পটাশপুরের তৃণমূল বিধায়ক নতুন পার্টি অফিসের উদ্বোধন করেন। বিধায়ক মঞ্চে উপস্থিত থাকতেই, পার্টি অফিস নিয়েও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। বলেন, "পার্টি অফিস মানে মন্দির। মন্দিরে কোনও অপকর্ম করা যাবে না। আগের নেতাদের আমি লক্ষ্য করেছি পার্টি অফিসে মদ খেত। পার্টি অফিসে আরও অনেক কিছু হত। মন্দিরে যদি আমি খারাপ কাজ করি, তাহলে সেই মন্দিরে কী ভগবান থাকবেন? ভগবান সেই মন্দির থেকে চলে যাবেন। আমাদের মাননীয় বিধায়ক আজ যে পার্টি অফিস উদ্বোধন করবেন, দয়া করে এর মধ্যে যেন কোনও খারাপ কাজ না হয়, তার জন্য আপনাদের নজর রাখতে হবে।"
এই বক্তব্য ঘিরে শোরগোল শুরু হতেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। দলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুদাম পণ্ডিত বলেন, "যাই হোক ওঁরা এত দিন বাদে স্বীকার করছেন। কিছু কিছু নেতার হয়ত বিবেকে লাগছে, নয়ত কাটমানি কম পেয়েছেন। তাই তিনি বলেছেন। আত্মসমালোচনা ভাল। ওঁরা মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছেন।"
দলে অসাধু লোক ঢুকে পড়েছে!
দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলার উদ্দেশ্য জানতে চাইলে পীযূষ বলেন, "দলে বেশ কিছু অসাধু ঢুকে পড়েছে। মদ বিক্রি থেকে শুরু করে অসাধু কাজ করে বেড়াচ্ছে। এদের জন্য দল ও নেতৃত্বের অপমান হচ্ছে। তাই একথা বলেছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল করি। এলাকার মানুষ চায় শান্তিতে থাকতে। তাই মদের প্রতিবাদ করেছি।" সব মিলিয়ে অস্বস্তি পিছু ছাড়ছে না তৃণমূলের।