ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর:  একাধিক মামলা। পরপর তলব। এর আগে সারদার ফাইল উধাওয়ের মামলায় তলব করা হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে। শ্মশানের জমি দুর্নীতি মামলাতেও তলব করা হয়েছিল। এবার তৃণমূল নেতার বাড়ি ভাঙচুরের মামলায় সৌমেন্দুব অধিকারীকে তলব করল পুলিশ। দুপুর থেকে টানা কাঁথি থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সৌমেন্দু অধিকারীকে। 


কোন মামলা:
হোলির দিনে তৃণমূল নেতার বাড়িতে ভাঙচুর করার অভিযোগ রয়েছে। সেই মামলাতেই এদিন সৌমেন্দু অধিকারীকে তলব করা হয়েছে। গত ১৮ মার্চ দোলের দিন, কাঁথির ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা খোকন চক্রবর্তীর বাড়িতে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। বিজেপি নেতা সৌমেন্দুর নেতৃত্বে ভাঙচুর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই মামলাতেই এদিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। এদিন বেলা সাড়ে ১২টায় কাঁথি থানায় পৌঁছে যান সৌমেন্দু। অভিযোগকারী খোকন চক্রবর্তীর স্ত্রী বর্তমানের কাঁথি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। সৌমেন্দুকে পুলিশের তলব নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূল নেতা।


বারবার তলব:
এর আগে বারবার বিজেপি নেতা সৌমেন্দু অধিকারীকে তলব করা হয়েছিল। এর আগে শুক্রবার তলব করা হয়। তারপর সোমবার, ফের শুক্রবার তলব। ৭ অক্টোবরের পরে ১০ অক্টোবর, ফের ১৪ অক্টোবর। এক সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয়বার থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল, শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে।


সৌমেন্দু-মামলা:
২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত কাঁথির প্রভাতকুমার কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ছিলেন সৌমেন্দু। সেই সময় তিনি তৃণমূলে ছিলেন। পরে দাদা শুভেন্দু অধিকারীর পথ অনুসরণ করে বিজেপিতে যোগ দেন ভাই সৌমেন্দু। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। অভিযোগ, সৌমেন্দু চেয়ারম্যান থাকাকালীন কলেজের নির্মাণ কাজে টেন্ডার ডাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছিল। মামলার প্রেক্ষিতে জেলাশাসককে তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সেই নির্দেশ মতো এদিন জেলাশাসকের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল যায় কাঁথির প্রভাতকুমার কলেজে।


১০ অক্টোবর সারদা ফাইল লোপাট সংক্রান্ত মামলায় কাঁথি থানায় ডাকা হয়েছিল সৌমেন্দু অধিকারীকে। টানা জিজ্ঞাসাবাদের পরে থানা থেকে বেরিয়ে সৌমেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, 'আমি ছেড়ে আসার পরে ১ বছর ৬ মাস পরে অভিযোগ। এতদিনে ৩ জন ওই চেয়ারে বসেছেন। একমাত্র আমাকেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।' জিজ্ঞাসাবাদ চলার সময় সৌমেন্দুর আইনজীবী অভিযোগ করেছিলেন, যে সৌমেন্দুকে খাবার খেতে দেওয়া হচ্ছে না। বই-কাগজও পড়তে দেওয়া হচ্ছে না।' জিজ্ঞাসাবাদের পরে সৌমেন্দু বলেন, 'চা-বিস্কিট খেয়েছি। বাইরের খাবার খাই না। এখানে বাড়ির খাবার অ্যালাও নেই। গল্পের বই-খবরের কাগজ পড়তে দেওয়া হয় না। হার্ডকোর ক্রিমিনালও পড়ার সুযোগ পায়। জানি না কেন দেওয়া হল না। আদালতে বলব।'  


আরও পড়ুন: হঠাৎ ঝাঁকুনি দিয়ে থামল ট্রেন, আতঙ্কে নামতে গিয়ে জখম যাত্রীরা