বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: ফের সামনে এল তৃণমূলের অন্দরের বিরোধের ছবি। এবার পূর্ব মেদিনীপুরে। দলের জেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। পাল্টা  প্রতিক্রিয়া ওই নেতা পীযূষ ভুঁইয়ার।


কী বলেছেন সুফিয়ান:  
পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur) জেলা পরিষদের সহ সভাপতি এবং নন্দীগ্রামের (Nandigram) তৃণমূল নেতা শেফ সুফিয়ান বলেন, 'ওঁকে মানার কোনও জায়গা নেই। দলকে জানিয়েছি, দলকে বলেছি, দল জানে। নিশ্চিত তার ব্যবস্থা নেবে।' এই দাবিকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান পীযূষ ভুঁইয়া।


এর আগে ইসলামপুরে:
সম্প্রতি বিরোধের এমন ছবিই উঠে এসেছিল উত্তর দিনাজপুরে। দলের ব্লক সভাপতিকে সন্ত্রাসবাদী বলে অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। এবার তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যানকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য শোনা গেল, নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি শেখ সুফিয়ানের গলায়। দলের রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তমলুক সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান পদে বসেছেন পীযূষ ভুঁইয়া। সেই সিদ্ধান্তকে কার্যত নস্যাৎ করে সুফিয়ানের দাবি তাঁকে জেলা চেয়ারম্যান মানার কোনও প্রশ্নই নেই। 


সুফিয়ান-বাণ:
শেখ সুফিয়ান বলেন, 'পীযূষ ভুঁইয়া নামটা আমি বলতে পারব না। কারণ আমার কাছে যেহেতু অবাঞ্ছনীয় লোক, কারণ আমি যেহেতু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিফ ইলেকশন এজেন্ট ছিলাম। তখন নির্বাচনের সময় পাঁচিলের বাইরে ছিল। বিজেপি করত। তাঁর দুই ছেলেও প্রকাশ্যে বিজেপির রাজনীতি করত। স্বাভাবিকভাবে তাঁকে রাজনৈতিক নেতা, চেয়ারম্যান মানার কোনও জায়গাই নেই। এবারে রাজ্য করেছে, রাজ্য নিশ্চয় সেটাকে নিয়ে ভাববে, যে ওকে রাখা যাবে কি যাবে না, রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস যা বলবে, সেটা মেনে নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।'


পাল্টা উত্তর পীযূষেরও:
তমলুক সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান পীযূষ ভুঁইয়া বলেন, 'পার্টি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। পার্টির নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কে মানবে কে মানবে না, তাঁর বিষয়। আমার কোনও ছেলেই বিজেপির সঙ্গে যুক্ত নয়। ওঁ মানে কি না মানে, তার আমার কাছে কোনও গুরুত্ব নেই। মমতার নেতৃত্বে উন্নয়ন হচ্ছে, অভিষেক পার্টিতে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি আনার চেষ্টা করছেন।' তাহলে কি সুফিয়ান অস্বচ্ছ? এই প্রশ্নের উত্তরে তাঁর জবাব, 'সেটা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। সেটা পার্টি জানে, জনগণ জানে।'


সম্প্রতি নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম নেতা পীযূষ ভুঁইয়াকে তমলুক সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান করেছে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। তারপর থেকেই তৃণমূলের অন্দরের বিভাজন স্পষ্ট হয়েছে। কখনও নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। আবার কখনও জেলা চেয়ারম্যানের ডাকা জনসংযোগ মিছিলে দেখা যায়নি শেখ সুফিয়ানদের। 


নন্দীগ্রামের বিধায়ক রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পূর্ব মেদিনীপুর তাঁর গড় বলেই পরিচিত। সেখানে তৃণমূলের মধ্যে এমন বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসায় কটাক্ষ ছুড়েছে বিজেপি (BJP)।


আরও পড়ুন: "ডাকাতির অভিযোগে জেল খেটেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, দু'-একটা গরু পাচারে আশ্চর্যের কী ?" বিস্ফোরক উদয়ন