অরিন্দম সেন, শুভেন্দু ভট্টাচার্য ও পূর্ণেন্দু সিংহ, দিনহাটা : দেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীই যেখানে ডাকাতির অভিযোগে জেল খাটেন, সেখানে দু’একটা গরু পাচার হবে, তাতে আর আশ্চর্যের কী ! বক্তা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। নিশানায় কোচবিহারের সাংসদ ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক (Nishith Pramanik)। এই বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে গরু পাচার ইস্যুতেই উদয়নকে পাল্টা নিশানা করেছে বিজেপি ।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বলছেন, আমরা কোনওদিনই দেখিনি যে অনুব্রত গরুর দড়ি নিয়ে বর্ডারে যাচ্ছে গরু টানতে টানতে তা পাচার করবে বলে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক প্রতিমন্ত্রী, তিনি আলিপুরদুয়ারে সোনার দোকানে ডাকাতির মামলায় ৪২ দিন জেল খেটেছিলেন। যে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জেল খাটেন সোনার দোকানে ডাকাতির অপরাধে বা অভিযোগে, সেখানে গরু পাচার দু-একটা হবে, এতে আশ্চর্য হওয়ার কী আছে ?
আরও পড়ুন ; কোচবিহারে চাকরির নামে টাকা তোলায় এক নম্বরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী’, নিশীথ প্রামাণিককে নিশানা উদয়ন গুহর
অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়ের সম্পত্তি এখন CBI স্ক্যানারে। এর পাশাপাশি বুধবার বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি, তাঁর মেয়ে ও আত্মীয়দের প্রায় ১৭ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ফ্রিজ করেছে সিবিআই। আর এরই মধ্যে গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে নাম না করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র ডেপুটি ও কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে নিশানা করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। প্রশ্ন তুললেন, সীমান্তে BSF’কে এড়িয়ে কীভাবে হচ্ছে গরু পাচার ?
কী বলছেন উদয়ন ?
উদয়ন গুহ বলেন, যদি এ ব্যাপারে ইডির ক্ষমতা থাকে, সিবিআইয়ের ক্ষমতা থাকে, তাহলে তারা বিএসএফের আধিকারিকদের ডাকুক বেশি করে প্রতিটি সীমান্ত এলাকায়। আর তাঁদের মাথার ওপর যে মন্ত্রীরা আছেন, তাঁদের ডেকে নিয়ে যদি জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে তাহলে বুঝতে পারব, ইডি-সিবিআই নিরপেক্ষ।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে একাধিকবার ফোন করা হলেও, তিনি ধরেননি। তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
যদিও এ প্রসঙ্গে পাল্টা নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন, দিনহাটা বর্ডারে যত গরু পাচার হয়, সমস্ত গরু পাচারের সাথে অপ্রত্যক্ষভাবে তিনি নিজে জড়িত। তাঁর লোকরাই বাংলাদেশ বর্ডারে গরু পাচার করে থাকেন। তাই গরু পাচারকারীদের পক্ষে সমর্থন করাটাই হচ্ছে তাঁর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং আদর্শ বলে আমরা মনে করি।
গরু পাচার বিতর্কে তৃণমূল ও বিজেপির বাগযুদ্ধে সরগরম হয়ে উঠেছে উত্তরবঙ্গের রাজনীতি।