বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: সমস্যার সূত্রপাত মিড-ডে মিলে কারচুপির অভিযোগ ঘিরে। তা নিয়ে কয়েকদিন আগেই উত্তেজনা ছড়িয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে। মিড-ডে মিলের কারচুপির অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছিল। তা নিয়ে ২ সেপ্টেম্বর রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার। তাতে জড়িয়ে গিয়েছিল রাজনৈতিক রংও। ওই অভিযোগ ঘিরে ধুন্ধুমার হয়েছিল কড়ক শচীন্দ্র স্মৃতি হাইস্কুলে। বিক্ষোভ হয়েছিল, আগুন লাগানো হয়েছিল, লাঠিচার্জও করেছিল পুলিশ। ওই ঘটনায় এবার পুলিশকে আক্রমণের নিশানা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।


অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ:
স্কুলে গন্ডগোলের ঘটনায় বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক। মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। উল্টোদিকে ওই ঘটনায় কার্যত পুলিশ ও তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। গন্ডগোল করানোর অভিযোগে, সাতজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরবর্তীকালে দীপক খাটুয়া নামে এক বিজেপি কর্মীকেও গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের হেফাজতে তাঁকে মারধরের অভিযোগও ওঠে। নন্দকুমারের বিজেপি কর্মী দীপক খাটুয়া বলেন, 'আমাকে গ্রেফতার করে মারধর করেছিল, আদালতে জামিন পেয়েছি। পুলিশি অত্যাচারে বাড়িতে থাকতে পারছি না।'


এই আবহেই রবিবার নন্দকুমারে একটি দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দলীয় কর্মীকে মারধরের অভিযোগ নিয়ে পুলিশকে নিশানা করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, 'আর এখানে পুলিশ বাবা, দীপক খাটুয়ার গায়ে হাত দিয়েছেন কেন তোলার সময়? কড়ক স্কুলের ঘটনায়? কে অধিকার দিয়েছে? নন্দকুমার থানাকে কে অধিকার দিয়েছে, এখানে কড়ক স্কুলের প্রতিবাদীদের গায়ে হাত দেওয়ার? মিড ডে মিলের চাল চুরি করবে, এমএলএ ভাগ খাবে, পঞ্চায়েতকে ভাগ দেবে, প্রতিবাদ করা যাবে না? এটা ভারত সরকারের চাল, কেন্দ্রীয় সরকার দিয়েছে। শুভেন্দুর পুলিশকে নিশানা করা নিয়ে তোপ দেগেছে তৃণমূল। স্কুলে গন্ডগোলের জন্য পাল্টা বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুলেছে রাজ্যের শাসক দল। 


তৃণমূলের কটাক্ষ:
নন্দকুমারের তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার দে বলেন, 'বিজেপি আশ্রিত সমাজবিরোধীরা ঘোলা জলে মাছ ধরার জন্য, শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্ব সেখানে হাঙ্গামা করতে যায় ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে। পড়ুয়া পরে বলেছে তাদের উস্কানি দিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবৈধ কাজ করতে বলা হয়। বাইকে আগুন ধরাতে বলা হয়েছে। শুভেন্দু ঘোলা জলে মাছ ধরেন, উনি আগেও এগুলি করেছেন, এখনও করছেন।'


বিজেপির তোলা অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সংবাদমাধ্যম ও অন্যান্য ফুটেজ দেখে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তের স্বার্থে একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে মারধর ও হয়রানির অভিযোগ ভিত্তিহীন।


আরও পড়ুন: 'ওঁর সব কাজ উল্টো, চণ্ডীপাঠও', টাকা দিয়ে ছবি লাগিয়ে দুর্গাপুজোর পবিত্রতা নষ্ট করছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ দিলীপ ঘোষের