সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: ডাইনি (Witch) অপবাদে দিনমজুরের পরিবারকে ভিটেছাড়া করার অভিযোগ উঠল পুরুলিয়া (Purulia) শহরে। ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৭ বছর ধরে নির্যাতন চলছে বলে অভিযোগ। পুলিশের ঘাড়ে দায় চাপিয়েছে পুর প্রশাসন। 


বিজ্ঞান এগোচ্ছে। দূর হচ্ছে অনেক অজানা, অদেখার অন্ধকার। কিন্তু এক শ্রেণির মানুষের মন থেকে কুসংস্কারের অন্ধকার যে আজও পুরোপুরি সরেনি তার প্রমাণ মিলল আরও একবার। 


পুরুলিয়া (Purulia) শহরে ডাইনি অপবাদে একটি পরিবারকে ভিটেছাড়া করার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৫ সালে। পেশায় দিনমজুর এক স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগ, প্রথমে তাঁর মাকে ডাইনি অপবাদ দেওয়া হয়। এখনও ঘরছাড়া অভিযোগকারীর মা ও বাবা। পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ায় কিছুদিনের জন্য নিরাপত্তা মেলে। পুলিশের নজরদারি উঠতেই পরিস্থিতি যে কে সেই। 


সম্প্রতি অত্যাচারের মাত্রা বাড়ে। তার জেরে সপ্তাহখানেক ধরে ভিটেছাড়া গোটা পরিবার। নাবালক সন্তানদের হাত ধরে কার্যত পথে পথে ঘুরছেন অভিযোগকারী দম্পতি। আক্রান্ত গৃহকর্তা বলছেন, ২০১৫ সালে মাকে ডাইনি অপবাদ দেওয়া হয়, বাবা-মা এখনও ঘরছাড়া। আমাদের ওপরেও অত্যাচার হয়েছিল। পুলিশ একবার নিরাপত্তা দিয়েছিল। পুলিশ চলে যাওয়ার পর আবার অত্যাচার শুরু হয়। 


আক্রান্ত গৃহকর্ত্রীর কথায়, আমার ওপর অ্যাসিড হামলার চেষ্টা হয়। প্রাণে মারার হুমকি। আমরা আতঙ্কিত। প্রাণভয়ে ঘর ছেড়েছি। যুক্তিবাদীরা বলছেন, ডাইনি বলে কিছু হয় না। সবই কুসংস্কার, অন্ধ বিশ্বাস। এর আগে ওই এলাকায় গিয়ে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। 


পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ পুরুলিয়া শাখার জেলা সম্পাদক নয়ন মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ওখানে গিয়ে বুঝিয়েছিলাম। কিছুদিন ঠিক ছিল। পুলিশকেও জানিয়েছিলাম। এখন পুরসভাকে বলেছি।


পুরুলিয়া পুরসভার প্রধান নবেন্দু মাহালি জানিয়েছেন, ওদের মধ্যে আগে থেকে ঝামেলা চলছিল। একটা মামলাও হয়েছে। পুলিশকে বলেছি আইনি পথে ব্যাপারটা দেখতে। এই ঘটনায় শুক্রবার বাণেশ্বর রাজোয়ার নামে অভিযোগকারীর প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পলাতক আরও দুই অভিযুক্ত।