সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ পুরুলিয়ার তালাজুড়ি কৃষি উন্নয়ন সমবায় ব্যাঙ্ক। ফলে অকূলপাথারে পড়েছেন গ্রাহকরা। ব্যাঙ্ক বন্ধের পিছনে রয়েছে শাসক দলের দুর্নীতি, অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। দ্রুত ব্যাঙ্ক খোলার বিষয়ে চেষ্টা করা হবে, বিরোধী দলের অভিযোগ উড়িয়ে আশ্বাস তৃণমূলের।


কেউ জমি বিক্রির টাকা গচ্ছিত রেখেছিলেন পরম ভরসায়. কেউ মেয়ের বিয়ের জন্য একটু একটু করে জমিয়েছিলেন টাকা। কিন্তু দিনের পর দিন ব্যাঙ্কের সামনে হত্যে দিয়েও তুলতে পারছেন না নিজেদের কষ্টার্জিত সঞ্চয়। 


কারণ গত দেড় বছর ধরে ব্যাঙ্কে ঝুলছে তালা।ফলে আদৌ সঞ্চিত টাকা হাতে পাবেন কি না তা নিয়েই সংশয়ে পড়েছেন পুরুলিয়ার কাশীপুর এলাকার বাসিন্দারা।স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার মানুষদের অর্থ সঞ্চয় করার একমাত্র অবলম্বন ছিল তালাজুড়ি কৃষি উন্নয়ন সমবায় ব্যাঙ্ক। বছর দেড়েক আগে আগুন লাগার পর থেকেই বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে ব্যাঙ্কটি। ফলে সঞ্চিত অর্থের ভবিষ্যৎ নিয়ে অথৈ জলে ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা। 


তালাজুড়ি কৃষি উন্নয়ন সমবায় ব্যাঙ্ক, পুরুলিয়ার এক গ্রাহক বেচি বাউড়ি বলেন, "আমি মেয়ের বিয়ের জন্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জমিয়েছিলাম। এখন মেয়ের বিয়ে কীভাবে দেব বুঝতে পারছি না। ব্যাঙ্ক কবে খুলবে জানতেও পারছি না।" উদ্বেগের সুর আরেক গ্রাহক বরুণ দেওঘরিয়ার গলায়। তিনি বলেন, "আমি একটি জমি বিক্রি করে ১২ লাখ টাকা ব্যাঙ্কে রেখেছিলাম। কিন্তু রোজই আসছি আর দেখছি ব্যাঙ্ক বন্ধ। টাকা তুলতে পারছি না। অনুরোধ করব ব্যাঙ্ক খোলার বিষয়টি দেখা হোক।"


প্রশাসনিক সূত্রে দাবি,পুরুলিয়া সেন্ট্রাল সমবায় ব্যাঙ্কের শাখা সংগঠন এই তালাজুড়ি কৃষি উন্নয়ন সমবায় ব্যাঙ্ক। বন্ধ ব্যাঙ্কটি খোলার ব্যাপারে স্থানীয়দের আশার আলো দেখাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। স্পেশাল অফিসার দিব্যজ্যোতি সিংদেও বলেন, "ওখানে একটা দুর্ঘটনা হওয়ায় বন্ধ রয়েছে। খোঁজখবর নিয়ে দেখছি কীভাবে দ্রুত চালু করা যায়।"


যদিও এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। পুরুলিয়া বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিবেক রাঙ্গা বলেন, "এই সমবায় ব্যাঙ্কগুলির টাকা লুঠ করছেন তৃণমূল নেতারা। এখানে মানুষকে পরিষেবা দেওয়া পরিকল্পনা এঁদের মাথাতেও নেই। আমার মনে হয় এখানে দুর্নীতি ধামাচাপ দেওয়ার চেষ্ঠা চলছে। কোনওদিন এই ব্যাঙ্ক খুলবে না। প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।"


অন্যদিকে, পুরুলিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, "ওই সমবায় ব্যাঙ্কটি চালুর জন্য আমরা একটা কমিটি করেছিলাম। চিন্তা ভাবনা চলছে কমিটির অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নিয়োগ করে দ্রুত সমস্যার সমাধান করার।"