অনির্বাণ বিশ্বাস, সন্দীপ সমাদ্দার, কলকাতা: ঝালদা পুরসভা নিয়ে ফের টানাপড়েন। গতকাল রাত থেকেই তুঙ্গে উঠেছিল তৎপরতা। কংগ্রেসের দাবি ছিল, ঝালদা পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন-সহ দুই নির্দল কাউন্সিলরকে দলে টেনে বোর্ড গঠন করতে চাইছে তৃণমূল। আচমকাই পুরুলিয়া থেকে কলকাতায় এনে সল্টলেকের যুব আবাসে রাখা হয়েছিল তাদের, অভিযোগ কংগ্রেসের। ওই দিন রাতেই সেখানে পৌঁছন নেপাল মাহাতো এবং কৌস্তভ বাগচি। নেপাল মাহাতো দাবি করেছিলেন, 'চেয়ারপার্সন-সহ ২ নির্দল কাউন্সিলরকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করেছিল তৃণমূল।' 


যদিও সেই দাবি, মানতে চাননি পুরসভার নির্দল কাউন্সিলর রঞ্জন কর্মকার। তিনি বলেন, 'তৃণমূলের কেউ যোগাযোগ করেনি আমার সঙ্গে, ভুল বোঝাবুঝি মিটে গিয়েছে। এবার মুখ খুলেছেন, পুরসভার চেয়ারপার্সন শীলা চট্টোপাধ্যায়। 


ঝালদা পুরসভা তৃণমূলের হাতে তুলে দেওয়ার জল্পনা নস্যাৎ করে পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন শীলা চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, মিটে গেছে। পুরসভার তহবিল সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে। ব্যক্তিগত কাজে কলকাতায় এসেছি। তৃণমূলের তরফে কেউ যোগাযোগ করেনি।' প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে খবর, শনিবার রাতে কলকাতায় আসেন শীলা চট্টোপাধ্যায় ও নির্দল কাউন্সিলর রঞ্জন কর্মকার। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের যুব আবাসে ওঠেন তাঁরা। গতকাল সেখানে গিয়ে ঝালদা পুরসভার চেয়ারপার্সন ও নির্দল কাউন্সিলরের সঙ্গে দেখা করেন পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেসের সভাপতি নেপাল মাহাতো। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। কংগ্রেস অভিযোগ করে, ভুল বুঝিয়ে চেয়ারপার্সন ও নির্দল কাউন্সিলরকে কলকাতায় এনে দলে টানার চেষ্টা করেছিল তৃণমূল। শেষপর্যন্ত তাদের অভিসন্ধি ব্যর্থ  হয়েছে।


দীর্ঘ টানাপড়েন, আইনি লড়াইয়ের পর, শেষমেশ ঝালদা পুরসভা নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে কংগ্রেস। রাজ্যের একমাত্র এই পুরসভাতেই ক্ষমতায় রয়েছে হাত শিবির। সেই পুরসভা নিয়েই ফের জটিলতা তৈরি হয়। পুরুলিয়া থেকে কলকাতায় চলে আসেন চেয়ারপার্সন শীলা চট্টোপাধ্যায় এবং নির্দল কাউন্সিলর রঞ্জন কর্মকার। প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়,শীলা চট্টোপাধ্যায় এবং রঞ্জন কর্মকারের কলকাতায় আসার পিছনে, দল ভাঙানোর কৌশল রয়েছে তৃণমূলের। সেই মতো ২ কাউন্সিলরের হদিশ পেতে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর শুরু করেন কংগ্রেস নেতারা। রবিবার সন্ধেয় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের যুব আবাসে গিয়ে, দু-জনের সঙ্গে দেখা করেন পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেসের সভাপতি নেপাল মাহাতো। সঙ্গে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীও।


তৃণমূলের লক্ষ্য ঝালদা:
কংগ্রেসের দল ভাঙানোর আশঙ্কা যে একেবারে ভিত্তিহীন নয়, তা কার্যত পরিষ্কার হয়েছে ঝালদা পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতা সুদীপ কর্মকারের কথায়। ঝালদার তৃণমূলের সহ সভাপতি সুদীপ কর্মকার বলেন, 'ওরা বুঝতে পেরেছে, সরকার পক্ষ না হলে পুরসভা চালানো সম্ভব নয়। তৃণমূল নিয়ে গেছে কাউকে এ কথাটা ভুল, ওরাই এখন চাইছে আমরা সরকারের সঙ্গে যোগ দিয়ে পুরসভা চালাব। নিজের ইচ্ছামতো যোগদান দেওয়ার জন্য গিয়েছিল।'


যদিও, দলবদলের জল্পনা খারিজ করেছেন কলকাতায় আসা, ঝালদার চেয়ারপার্সন শীলা চট্টোপাধ্যায় এবং নির্দল কাউন্সিলর রঞ্জন কর্মকার। তাহলে কাউন্সিলরদের আচমকা কলকাতায় আসার কারণ কী? নেপথ্য়ে কী রহস্য়? কে ঠিক বলছেন? তা নিয়ে জল্পনা থামছে না।


আরও পড়ুন: 'একবছর বিনা বিচারে আছি', নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে এবার মমতার হস্তক্ষেপ দাবি পার্থর