পুরুলিয়া: রাজ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে শিশুদের অজানা জ্বর। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোমর বাঁধছে রাজ্যে। আর এরমধ্যেই শিশু চিকিৎসায় গাফিলতি, পরিকাঠামোর অভাব-সহ একগুচ্ছ অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিভাবকদের বিক্ষোভ। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক বিভাগে বেড রয়েছে ১১৬টি। অথচ শিশু ভর্তি রয়েছে ২১৪ জন। অনেক ক্ষেত্রে একটা বেডেই পাশাপাশি রাখা হয়েছে একাধিক শিশুকে। এ ছবি পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের। গত কয়েকদিন ধরেই এই হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। 


কেউ নিউমোনিয়া, কেউ ইনফ্লুয়েঞ্জা, কেউ আবার RS ভাইরাসে আক্রান্ত। এরইমধ্যে, হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে অসন্তুষ্ট শিশুর অভিভাবকরা। চিকিৎসায় গাফিলতি, বেডের অভাব-সহ একগুচ্ছ অভিযোগে রবিবার হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। সমস্যার কথা খানিকটা স্বীকার করে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর এনিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। শাসকদলকে নিশানা করেছে বিজেপি। 


পুরুলিয়ার  বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, 'রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রী, তিনি ভোট নিয়ে ব্যস্ত। মালদায় ১০টা মরেছে, আমাদের এখানে মরলে, ছেড়ে কথা বলব না। পঞ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু জানান, সব ঠিকঠাক আছে আর আমার কাছে কেও কোনো অভিযোগ করেনি আমি চোখে যেটা দেখলাম সটাই বললাম আর আমার সঙ্গে ডাক্তার ও ছিল। হাসপাতালে কোন সমস্যা নেই। সবমিলিয়ে শিশুদের জ্বর নিয়ে ক্রমশ বাড়ছে উদ্বেগ। সেই জ্বরের উত্তাপ সংক্রমিত হচ্ছে রাজনীতিতেও। 


অন্যদিকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে ৪ দিনে মৃত্যু হল ৬ শিশুর। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও মৃত্যু হয় এক বালিকার। 


জলপাইগুড়ি ও পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর হাসপাতালেও জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি বেশ কয়েকজন শিশু। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেওয়া হয়েছে প্রস্তুতি।
জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি আরও এক শিশুর মৃত্যু হওয়ায়, মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এ নিয়ে ৪ দিনে মৃত্যু হল ৬ শিশুর। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধেয় জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয় কালিয়াচকের বাসিন্দা ৫ মাসের শিশু। রাতেই মৃত্যু হয় তার। 


এ প্রসঙ্গে, মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের সুপার পুরঞ্জয় সাহা বলেন, সঙ্কটজনক অবস্থায় নিয়ে আসায় চিকিৎসার সুযোগ মেলেনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ  জানিয়েছে, এই মুহূর্তে ১৩৫ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। তারমধ্যে ৮ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। মালদার পাশাপাশি উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি ১০ বছরের এক বালিকার মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে মৃত্যু হয় হেমতাবাদের ইসলামপুরের বাসিন্দা ওই বালিকার।
 
উল্লেখ্য, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে শিশুদের চিকিৎসায় গঠিত হয়েছে সাত সদস্যের বিশেষজ্ঞ টিম। হাসপাতাল সূত্রে খবর, জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে ১০২ জন শিশু এখন চিকিৎসাধীন। উত্তরবঙ্গের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্তকুমার রায় বলেন, জ্বরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ৩ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা।


আরও পড়ুন: Kolkata Weather Update : রাতভর তুমুল বৃষ্টিতে জল থৈ থৈ শহর, উত্তর থেকে দক্ষিণের অনেকাংশ জলের তলায়


আরও পড়ুন: Purulia: নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দুই বাইক আরোহীকে ধাক্কা অন্য বাইকের, মৃত ১, আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ৩