আদ্রা : পুরুলিয়ায় (Purulia) স্কুলের শৌচাগারের দেওয়াল ভেঙে বালকের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভবন সংস্কার না হলে, শিশুদের স্কুলে পাঠানো হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন অভিভাবকরা। পাশাপাশি, মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ারও দাবি উঠেছে। দুর্গাপুজোয় অনুদান হলে নিহত শিশুর পরিবারকে কেন সাহায্য করা হবে না ? প্রশ্ন বিজেপির (BJP)।
পুরুলিয়ার প্রাইমারি স্কুলের প্রাঙ্গণে খেলছিল ৩-৪ জন শিশু। কেউ ভাবতেও পারেনি, আচমকা এমন ভয়ঙ্কর বিপর্যয় নেমে আসবে ! শুক্রবার, আদ্রার, শ্যামসুন্দরপুর প্রাইমারি স্কুলের, শৌচাগারের দেওয়াল ভেঙে মৃত্যু হয়, মাত্র ৯ বছরের এক বালকের ! স্কুল, যেখানে সন্তানদের পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত হন মা-বাবারা। সেখানে এমন ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ! এই ঘটনার জেরে, স্কুলে আর বাচ্চাদের পাঠাতে ভরসা পাচ্ছে না মা-বাবারা। শনিবার, স্কুল খোলা থাকলেও, স্কুলে যায়নি একজন পড়ুয়াও। অভিভাবকদের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণকাজ হওয়ায় এত বড় দুর্ঘটনা। তাঁরা জানিয়েছেন, যতদিন না, শৌচালয় ভেঙে, নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে, ততদিন সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না তাঁরা।
কী বলছেন অভিভাবকরা ?
সিংহরায় কিসকু নামে এক অভিভাবক বলেন, মেরামত করা হয়নি। তাই বাচ্চাটা মরে গেল। বাথরুমগুলো ভালোভাবে হয়নি। যাতে ভালোভাবে হয়, এই দাবি রেখে স্কুল বন্ধ রেখেছি। ছেলেগুলোকে পাঠাতে ভয় পাচ্ছি। বাচ্চারাও আতঙ্কে।
শুক্রবার, মলীন্দ্র চিত্রকর নামে ওই বালকের মৃত্যুতে শোকে পাথর গোটা গ্রাম। সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন, মৃতের পরিবার। মৃত বালকের বাবা কালীশঙ্কর চিত্রকর বলেন, আমার একটা ছেলে। একজন চলে গেল। ৩টে মেয়ে। কী করে বিয়ে দেব ? আর কাজ করতে পারব না। ক্ষতিপূরণ না পেলে কী করে হবে ? আমরা কী করে জানব স্কুলে ওরকম হচ্ছে। ছেলে কে তো আর পাব না।
বিদ্যালয় পরিদর্শক সুবীর কর্মকার বলেন, স্কুল বন্ধ না। স্কুলের টিচাররা এসেছেন। অভিভাবকদের দাবি দাওয়া হায়ার অথরিটিকে পাঠাব। বলছে, টয়লেট, বাউন্ডারি ওয়াল.. ইঞ্জিনিয়ার এসে এস্টিমট করবে। ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা প্রশাসনকে জানাচ্ছি।
এদিকে দুর্গাপুজোয় ক্ষতিপূরণ হলে, এক্ষেত্রে কেন নয় ? এই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে বিজেপি।
প্রাক্তন CPM সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া বলেন, তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলো কীভাবে দুর্নীতির আখড়া হয়ে উঠেছে, শিশুটি মারা গেল দুর্নীতির জন্য। সিমেন্ট ব্যবহার হয়নি। টাকা মেরেছে। তাই পঞ্চায়েতকে দায়ি করছি। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
পুরুলিয়া জেলা কমিটির বিজেপির সদস্য বলেন কার্তিক তিওয়ারি বলেন, যতটা কাজ হয়েছে, তা দুর্নীতিগ্রস্ত। দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত হওয়া খুবই দরকার। সরকারের দায়িত্ব ক্ষতিপূরণ দেওয়ার, দুর্গাপুজোয় দিতে পারে, এক্ষেত্রে তো ১০ লাখ টাকা দেওয়া দরকার।
যদিও পুরুলিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হাজারি বাউড়ি বলেন, পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণটা দেখা হচ্ছে। অভিযোগ তদন্তের বিষয়। সেগুলো সবাই দেখছে।
স্কুলের প্রশাসনিক বৈঠক শুরু হয়েছে। কবে আতঙ্ক থেকে মুক্তি মিলবে সেটাই দেখার।