পুরুলিয়া: ঝালদাকাণ্ডের (Jhandal Murder Case) প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের (Niranjan Vaishnava Death) রহস্যমৃত্যুতে পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ হল এ বার। পুলিশের বিরুদ্ধে ঝালদা থানায় অভিযোগ দায়ের নিরঞ্জনের পরিবারের। পুলিশের বিরুদ্ধে নিরঞ্জনের উপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগ। চাপ দিয়ে কিছু লিখিয়ে নেওয়ার অভিযোগ মৃতের পরিবারের। মৃত্যুর পর থেকে নিরঞ্জনের মোবাইল ফোন রহস্যজনক ভাবে উধাও হয়ে গিয়েছে বলে দাবি তাদেরয অভিযোগপত্রেও তার উল্লেখ রয়েছে।
তপনকে চোখের সামনে গুলিবিদ্ধ হতে দেখেন নিরঞ্জন
বুধবার নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের প্রধান সাক্ষী এবং প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর বাড়ি থেকে। তা নিয়েই নতুন করে কাঠগড়ায় পুলিশ। চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। কারণ নিরঞ্জন সুইসাইড নোটে পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্থার কথা লিখে গিয়েছেন। লাগাতার তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন নিজের শেষ চিঠিতে।
গত ১৩ মার্চ ঘুরতে বেরিয়ে খুন হন পুরুলিয়ার (Purulia News) ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু (Tapan Kandu Murder)। সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বন্ধু নিরঞ্জন। বুধবার রহস্যজনকভাবে বাড়ি থেকে তাঁরই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয় সুইসাইড নোটও।স্থানীয়দের দাবি, মঙ্গলবার রাতে বন্ধুর বাড়িতে ছিলেন কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের অন্যতম প্রধাম সাক্ষী নিরঞ্জন। বুধবার ভোরে বাড়ি ফেরেন। তার পর ঘর থেকে ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
আত্মীয়দের দেওয়া সুইসাইড নোট অনুযায়ী, কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের সাক্ষী নিরঞ্জন লেখেন, ‘যে দিন তপনের (নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর) হত্যা হয়, সে দিন থেকে আমি মানসিক অবসাদে ভুগছি। যে দৃশ্য দেখেছি, তা কোনও ভাবেই মাথা থেকে বার করতে পাচ্ছি না। ফলে ঘুম হচ্ছে না রাতে। শুধু ওই ঘটনাই মনের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তার পর থেকে বার বার পুলিশের ডাক. আমি জীবনে থানার চৌকাঠ পার করিনি। এই সব আমি আর সহ্য করতে না পেরে এই পথ বেছে নিলাম। এতে কারও কোনও প্ররোচনা, চাপ বা হাত নেই। আমি স্বেচ্ছায় আত্মত্যাগ করলাম।’
ফের পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে
বুধবার খবর পেয়ে নিরঞ্জনের মৃতদেহ উদ্ধারে গেলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। এই রহস্যমৃত্যুর ঘটনাতেও CBI তদন্তের দাবি জানিয়েছে মৃতের আত্মীয়রা। মৃতের আত্মীয় অর্ণব দাঁ বলেন, “একটা শিক্ষিত মানুষ ফাঁসি কেন দিল, সেটা CBI তদন্ত দরকার।”
তপনের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু আবার বলেন, “যখন আমার স্বামীর ঘটনা ঘটে, তখন উনিও সঙ্গে ছিলেন। হঠাৎ করে আত্মহত্যা করলেন কেন? নিশ্চই রহস্য আছে...হয়ত কেউ চাপ দিয়েছে। আমার স্বামীর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কিছু জানতেন হয়ত। কালকেও এসেছিলেন। হঠাৎ আত্মহত্যা করলেন কেন?”
মৃতের পরিবারের চাঞ্চল্যকর দাবি, মঙ্গলবার থেকেই নিরঞ্জনের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। সকালে মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকেই মোবাইল ফোনের খোঁজ মিলছে না।যদিও পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, সুইসাইড নোটেই সব কিছু পরিষ্কার করে বলা আছে।তিনি যেহেতু এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, তাই স্বাভাবিকভাবে তার উপর চাপ পড়েছিল। উনি নিজেই সেটা লিখেছেন। আর পুলিশ নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত করছিল। উনি যেহেতু সাধারণ মানুষ, তাই এটাতে অভ্যস্ত ছিলেন না। উনি পুলিশকে দোষ দেননি, তা সুইসাইউ নোটেই লেখা রয়েছে।