সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
কী নির্দেশ:
অবিলম্বে রাজ্য পুলিশের হাতে থাকা সব নথি সিবিআইকে (CBI) দেওয়ার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (High Court)। ৪৫ দিনের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। অভিযোগকারী ও মানুষের মনে আস্থা ফেরাতে এই নির্দেশ। বলেছে হাইকোর্ট। ১৩ মার্চ খুন (Murder) হয়েছিলেন ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। সেই ঘটনায় স্থানীয় থানার আইসি-র বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু তদন্ত শেষ হওয়ার আগে পুলিশ সুপার, আইসি-কে ক্লিনচিট দিচ্ছেন। পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের।
পরিবারের প্রতিক্রিয়া:
সিবিআই তদন্তের নির্দেশের কথা জানতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। তিনি বলেন, 'সিবিআই হয়েছে, এবার বিচার পাব। এবার দোষীরা সবাই সামনে আসবে।' তপন কান্দু খুনে জড়িত আইসি। সিবিআই হয়েছে, ধরা পড়বে আইসি-ও। দাবি তপন কান্দুর স্ত্রীর। রাজনৈতিক খুন, সেইজন্য তৃণমূলের কোনও নেতা বাড়িতে আসেনি, দাবি তাঁর।
এর আগে তপন কান্দু খুনে পরিবারের দিকেই নিশানা করেছিল রাজ্য পুলিশ (Police)। খুনের অভিযোগে তপন কান্দুর দাদাকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। পারিবারিক (family) বিবাদে খুন বলে দাবি করেছিল রাজ্য পুলিশ। পুলিশের দাবি ছিল, খুনিকে ৭ লক্ষ টাকা দেন তপন কান্দুর দাদা নরেন কান্দু। কংগ্রেস (Congress) কাউন্সিলর হত্যাকাণ্ডে পুরুলিয়ার (Purulia) পুলিশ সুপার খোদ এমন দাবি করেছিলেন। সেই দাবি সরাসরি নাকচ করে দিয়েছিলেন নিহতের স্ত্রী। ওই ঘটনায় ঝালদার আইসিকে ক্লিনচিট দিয়েছেন এসপি (SP)। যদিও প্রথম থেকেই আইসির (IC) বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিল নিহতের পরিবার। তপন কান্দু খুনের ঘটনায় রবিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান। তিনি বলেন, "পারিবারিক বিবাদ ছিল দুই ভাইয়ের মধ্যে। তপন কান্দু বনাম নরেন কান্দু। নরেন কান্দু ৭ লাখ টাকা দিয়েছিল।" পাশাপাশি শুরু থেকেই নিহতের পরিবার যাঁর বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছিল, সেই ঝালদা থানার IC-কে সাংবাদিক সম্মেলনে বসেই ক্লিনচিট দিয়েছেন খোদ পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, "এখনও পর্যন্ত তদন্তে জানা গেছে ঝালদার আইসি জড়িত নন। ভাইরাল অডিও আলাদা ইস্যু। আমরা তার সত্যতা যাচাই করছি। যদি কিছু পাওয়া যায় তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।"
যদিও পুলিশের দাবিকে নস্যাত্ করে দিয়েছিলেন নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলরের স্ত্রী। জানিয়েছেন, তদন্তে আস্থা রাখতে পারছে না পরিবার। সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় তাঁরা। নিহত কাউন্সিলরের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু বলেন, "পারিবারিক কোনও তেমন কিছু ছিল না। পুলিশের উপর আস্থা নেই আমাদের। পুলিশের তদন্তে খুশি নই। সিবিআই চাই। আইসিকে গ্রেফতার করলে জানা যাবে। ওঁর ফোন কেন সিজ করা হয়নি।" তারপরেই সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে শুনানির পর তপন কান্দু খুনের (Tapan Kandu Murder) ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।