পুরুলিয়া : মনোনয়ন দিলেও মেলেনি প্রতীক। 'বিদ্রোহী' পুরুলিয়ার তৃণমূল নেতা। 'দলের যাতে ভরাডুবি হয়, এবার সেজন্য মাঠে নামব' বলে হুঙ্কার ছাড়লেন পুরুলিয়ার তৃণমূল জেলা সহ সভাপতি উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়া জেলা পরিষদে মনোনয়ন জমা দেন তিনি। মনোনয়ন জমা দিলেও, উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রতীক দেয়নি দল। তাঁর পরিবর্তে নিবেদিতা মাহাতোকে প্রার্থী করেছে দল।
এনিয়ে স্পষ্টতই অসন্তুষ্ট উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "এই তৃণমূল যে চক্রান্ত করে, ষড়যন্ত্র করে এবং দুর্নীতিপূর্ণভাবে অনেকের কাছে পয়সা নিয়ে টিকিট দিয়েছে শোনা যাচ্ছে। এই ছোকরাগুলো যাঁরা রাজনীতির 'র' জানে না , তাঁদের বয়সের সমান আমার রাজনৈতিক জীবন, তাঁরা যেভাবে পুরুলিয়ার জেলার মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন, এই নির্বাচনে তৃণমূলের একেবারে ভরাডুবি হবে বলে নিশ্চিত আছি। কারণ, পুরুলিয়া-২এও যোগ্য প্রার্থীকে টিকিট দেওয়া হয়নি। এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমি সর্বতোভাবে চেষ্টা করব, তৃণমূলের যাতে ভরাডুবি হয়। যেভাবে তৃণমূল উপযুক্ত লোকদের প্রার্থী করেনি, তাতে তারা নিশ্চিত পরাজিত হবে। তার পরে আমি চিন্তাভাবনা করব।"
অন্যদিকে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলছেন, "হয়তো সেই মুহূর্তে একটা রাগ-অভিমান থেকে এই কথাগুলো বলেছেন। পরবর্তীকালে তিনি বলেছেন, দলের হয়ে কাজ করবেন। উনি যেহেতু টিকিট পাননি, ওঁর মধ্যে একটা অভিমান হয়েছে। কিন্তু, বিষয়টা এমন কিছু না। আমরা নিজেদের মধ্যে বসে মিটিয়ে নেব।"
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের আর বেশি দিন বাকি নেই ! সেই আবহে জেলায় জেলায় শাসকদলে ভাঙনের ছবি সামনে এসেছে ! সম্প্রতি পুরুলিয়ার ঝালদায় তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসের হাত ধরেন দুই তৃণমূল নেতা ও তাঁদের অনুগামীরা।
ঝালদা ১ নম্বর ব্লকের সহ সভাপতি বিপ্রদাস মাহাতো ও তাঁর স্ত্রী বীণা মাহাতো, যিনি ঝালদা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, গত বুধবার, দলের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতোর হাত থেকে কংগ্রেসের পতাকা হাতে তুলে নেন ২ তৃণমূল নেতা। তাঁদের বেশ কিছু অনুগামীও শাসক দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন।
গত বছর ১৩ মার্চ, এই ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তারপর নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে, বোর্ড গঠন নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে কংগ্রেসের হাতে গিয়েছে ঝালদা পুরসভা। এবার ভোট গ্রামবাংলার। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সেই ঝালদাতেই এবার তৃণমূলে ভাঙন ধরিয়ে শক্তি বাড়ায় কংগ্রেস।