হংসরাজ সিংহ, পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার (Purulia) রঘুনাথপুরে (Raghunathpur) তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ডেকে ধাক্কা খেল বিজেপি (BJP)। যাকে ভরসা করে গেরুয়া শিবির অনাস্থা ডেকেছিল, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (JMM) সেই সদস্য অনুপস্থিত থাকায় বাতিল হয়ে যায় তলবি সভা। ক্ষমতায় বহাল রইলেন তৃণমূলের (TMC) প্রধান। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার পরিকল্পনা নিয়েছিল বিজেপি। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার এক সদস্যের সমর্থন নিয়ে অনাস্থা ডাকে তারা। কিন্তু তলবি সভায়, অনাস্থার দোসর ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাই রইল অনুপস্থিত। তার জেরে ভেস্তে গেল অনাস্থা পরিকল্পনা। ক্ষমতায় বহাল রইলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান। এমন ঘটনার সাক্ষী হল পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ২ নম্বর ব্লকের চেলিয়ামা গ্রাম পঞ্চায়েত।
১৮ আসনের চেলিয়ামা গ্রাম পঞ্চায়েত। গত পঞ্চায়েত ভোটে সেখানে ৯টি আসনে জয়ী হয় বিজেপি। ৫টি আসন জেতে তৃণমূল। সিপিএম ২টি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা প্রার্থী ১টি এবং নির্দল প্রার্থী ১টি আসনে জয়ী হন। অভিযোগ, বোর্ড গঠনের দিন পঞ্চায়েতে বিজেপি সদস্যদের উপস্থিত থাকতে না দিয়ে ৫টি আসন জিতেই ক্ষমতাসীন হয় তৃণমূল। শাসকদল থেকেই প্রধান নির্বাচিত হন।
পরে একজন সিপিএম এবং একজন নির্দল সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় শাসকদলের সদস্য ৫ থেকে বেড়ে হয় ৭। ১৮ আসনের পঞ্চায়েত থেকে তৃণমূলের প্রধানকে সরাতে ১০টি ভোটের দরকার ছিল।
সেইমতো ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার এক সদস্যের সমর্থন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন বিজেপির ৯ সদস্য।কিন্তু ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সদস্য তলবি সভায় হাজির হননি।
রঘুনাথপুর ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অনমিত্রা সোম বলেছেন, কেবল মাত্র ৯ জন সদস্য উপস্থিত থাকায় নিয়ম মোতাবেক কোটা পূরণ হয়নি। তাই এদিনের মিটিং বাতিল হয়েছে।
এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। রঘুনাথপুর ২ ব্লকের বিজেপি সভাপতি অসীম চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ,স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় অবৈধভাবে পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আমাদের ৯ জন সদস্য অনাস্থা ভোটদানে উপস্থিত থাকলেও তাকে মান্যতা দেয়নি প্রশাসন। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হব।
অন্যদিকে, পুরুলিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। পঞ্চায়েতের সদস্যদের আমাদের প্রধানের প্রতি আস্থা রয়েছে। তাই অনেক সদস্য আজ বিজেপির ডাকা অনাস্থা প্রস্তাবে সামিল হননি।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপি কি মামলার পথে হাঁটবে, সেটাই এখন সেটাই দেখার।