হংসরাজ সিংহ, পুরুলিয়া: জেলাশাসকের পর এবার ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক। বদলি করা হল পুরুলিয়ার হুড়া ও বলরামপুরের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে। সেই পদে এসেছেন কালিম্পং ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুই আধিকারিক।
কাকে বদলি:
হুড়ার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক অনুপম ভট্টাচার্যকে বদলি করা হয়েছে। তাঁর বদলে এই পদে আনা হয়েছে দেবাশিস পানকে। তিনি কালিম্পং এক নম্বর ব্লকের আধিকারিক ছিলেন। অন্যদিকে বলরামপুরের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক সজল মালাকারের জায়গায় আনা হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার DL & LRO অরুণকুমার রায়কে। শুক্রবার বদলির এই নির্দেশ জারি করা হয়।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক:
সোমবার পুরুলিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠক করেন। বলরামপুর ও হুড়ার ভূমি এবং ভূমি সংস্কার দফতর নিয়ে একাধিক অভিযোগ ওঠে। জমির মিউটেশন-সহ বিভিন্ন সরকারি কাজ করতে গিয়ে হেনস্থা ও দালালচক্রের অভিযোগও তোলা হয়। প্রশাসনিক সভায় অভিযোগকারীও উপস্থিত ছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজনের নাম ধরে ডাকেন। তাঁর অভিযোগের কথা বলেন। অভিযোগকারীর হাতে মাইক দিয়ে জানতে চান। একাধিক অভিযোগ ঘিরে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনকে সতর্ক করেন। তিনি সেদিন বলেছিলেন, 'জীবন্ত উদাহরণ....ব্লক বলরামপুর, জিপি উরমা। গ্রাম নামসোল, আগুইবেরা। রাজেন হেমব্রম। উপস্থিত আছেন? দাঁড়াও। বাবা মারা গেছে ২০১১ সালে। জমি নিজের নামে করতে বিএলআরও অফিসে গেলে বলে, পড়চা বের করতে হবে। পড়চার প্রতি কপি বের করতে দালাল নিল ১০০ টাকা করে। বিএলআরও অফিসের উল্টো দিকের দোকান মিউটেশন করতে নিল দেড় হাজার টাকা। তার ফোন নম্বরও দিয়ে দিয়েছে। আমি যে কথাটা বললাম, সেটা মিথ্যা না সত্য? মাইক দাও ওনার হাতে।' সেদিন মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশের পরে সেদিনই সক্রিয় হয় পুলিশ। বলরামপুরের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের অফিসের সামনে দুটি দোকান সিল করে দেয় পুলিশ। বলরামপুর ও হুড়া থেকে জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই ঘটনার চারদিনের মাথায় বদলির নির্দেশ জারি হয়।
আরও পড়ুন: উপনির্বাচন ঘিরে সরগরম ত্রিপুরা, কড়া টক্কর শাসক-বিরোধীর