সন্দীপ সমাদ্দার, ঝালদা : লোকালয়ে ঢুকে বুনো হাতির তাণ্ডব। স্কুলের দেওয়াল ভেঙে মিড ডে মিলের চাল, ডাল খেয়ে তাণ্ডব চালাল হাতির পাল। এলাকার খেতে সবজি, ফসল নষ্ট করার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বাড়িও ভেঙে দেয় প্রায় ৩০টি বুনো হাতির একটি দল। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পুরুলিয়ার ঝালদা বনাঞ্চলের কলমা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। আতঙ্কে মাধ্যমিক পড়ুয়ারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল রাতে পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকে প্রায় ৩০টি বুনো হাতির একটি দল ঝালদার কলমা এলাকার মাহাতমারা, কোচাজারা, বাঁদুলহর এলাকায় লোকালয়ে ঢুকে রাতভর তাণ্ডব চালায় । বাঁদুলহর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেওয়াল ভেঙে মিড ডে মিলের চাল, ডাল খায়। পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি বাড়িও ভেঙে দেয়। মাহাতমারা, কোচাজারা এলাকায় সবজি, ফসল নষ্ট করে দেয় । বাড়িতে ঢুকে ধান খেয়ে, মাড়িয়ে দেয় । রাতভর বেশ কয়েকটি গ্রামে তাণ্ডব চালানোর পর জঙ্গলে প্রবেশ করে হাতির দলটি।
ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায় । খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছান বন দফতরের আধিকারিকরা। এলাকাবাসী দাবি জানান, ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং হাতির দলের উপর নজরদারি চালাতে হবে । যাতে আগামীদিনে গ্রামে হাতি না প্রবেশ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে বন দফতরকে। পাশাপাশি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য যানবাহনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী । কলমা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান চৈতন বাগতি জানান, এলাকার মানুষ যাতে ক্ষতিপূরণ পান তার জন্য বন দফতরকে বিষয়টি জানানো হবে।
এর আগে পুজোর সময়ে পশ্চিমের জেলায় সমস্যা হয়েছিল হাতির তাণ্ডব নিয়ে। পুজোর পরপরই সেই ছবি দেখা যায় ঝাড়গ্রামে (Jhargram)। জঙ্গলমহলের এই জেলায় টানা হাতির তাণ্ডব চলে। হাতির (Elephant Attack) তাণ্ডবের জেরে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। গত নভেম্বর মাসে হাতির দলের তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। প্রায় পঁচিশটি হাতির দল রাত থেকে বড় চাঁদবিলা গ্রামে তাণ্ডব চালায়। গ্রামবাসী অভিযোগ জানান, হাতির দলের দাপটে নষ্ট হয়েছে বিঘের পর বিঘে জমির ধান।
গ্রামবাসীর অভিযোগ, রাতেই নিজের জমির কাছে হাতির দলের মুখোমুখি হয়েছিলেন ওই গ্রামেরই বাসিন্দা পরীক্ষিত মাহাতো। হাতির দলের আক্রমণ থেকে প্রাণে বাঁচতে পুকুরে ঝাঁপ দিয়েছিলেন তিনি। গ্রামবাসী দাবি জানান, হাতির পালের আক্রমণের সময় বারবার বন দফতরকে খবর দেওয়া হলেও স্থানীয় প্রশাসন বা বন দফতরের তরফে কোনওরকম সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।