কলকাতা: মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় আন্দোলনে উত্তাল আরজি কর মেডিক্য়াল (R G Kar Hospital) কলেজ  হাসপাতাল। রবিবার সন্ধেয় পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানান, আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাসিস্টান্ট কমিশনার চন্দন গুহকে সরিয়ে দেওয়া দেওয়া হয়েছে। এদিন পুলিশ কমিশনার বলেন, 'পুলিশি তদন্তে সন্তুষ্ট আন্দোলনকারীরা। আরজি করের ঘটনা নিয়ে নানা গুজব ছড়িয়েছে। কলকাতা পুলিশ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করছে। ঘটনায় আরও কেউ জড়িত মনে হলে, পুলিশকে জানান।' 


আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের সময় কি চারতলার সেমিনার হলে একাই ছিল সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়? না কি তার সঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছিল আরও কেউ? ঘটনার নেপথ্যে কি সঞ্জয় একা? নাকি দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তি জড়িত? এই বিষয়টাই খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর, সোমবার ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়ার আগে, চারতলার সেমিনার হলে যাবে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের তিন সদস্যের দল। তারপর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন কলকাতা পুলিশের অফিসাররা। সেখানে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত হাতে আসা পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মিলিয়ে দেখা হবে।


কী বললেন পুলিশ কমিশনার?

এর আগে রবিবার বিকেলে ফের আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যান পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। তিনি বলেন, "এখন অনেক গুজব রটছে। কেউ বলছে একাধিক লোকের যোগ রয়েছে, কেউ বলছে তিনজনের সিমেন পাওয়া গেছে, আমরা চেপে যাচ্ছি, ধামাচাপা দিচ্ছি--এগুলো সব গুজব। আমি বলছি আপনারা যদি কোথাও জানতে পারেন আরও কেউ যুক্ত, আমাদের জানান। আমরা কাউকে ছাড়ব না।যে কোনও সময় কিছু জানতে হলে আমাদের বলুন, আমরা জানাব।''

শুক্রবার সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চেষ্ট ডিপার্টমেন্টের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ। তাঁর ওপর কী ধরনের অত্যাচার করা হয়েছে, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে তা ছত্রে ছত্রে উঠে এসেছে। হাড় হিম করা এই ঘটনায় শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করা হয়, কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। এমন জঘন্য অপরাধে গ্রেফতার হওয়ার পরও তার মধ্যে কোনও অনুতাপ দেখা যায়নি। গ্রেফতারের পরও অত্যন্ত ভাবলেশহীন ছিল সে। পুলিশ সূত্রে দাবি, গ্রেফতারের পর সঞ্জয় রায়ের কাছ থেকে উদ্ধার হয় জুতো। তাতে রক্ত লেগে ছিল। সেই জুতো জোড়া বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, এই ভয়ঙ্করকাণ্ড ঘটানোর পর প্রমাণ লোপাট করতে জামা ও বারমুডা ধুয়ে ফেলে সঞ্জয়।


প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ওই মহিলা চিকিৎসককে আগে থেকেই চিনত এই সিভিক ভলান্টিয়ার? আগে থেকেই তাঁকে টার্গেট করেছিল? বৃহস্পতিবার সবার নজর এড়িয়ে কী করে জরুরি বিভাগের চারতলায় পৌঁছে গেছিল সে? চেষ্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের সেমিনার হল কি রেকি করেছিল পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতালে যাতায়াতের সূত্রে মহিলা চিকিৎসককে আগে দেখে থাকতে পারে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: R G Kar Hospital: আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ, কাল থেকে দেশজুড়ে আন্দোলনের ডাক