কলকাতা : "ওই রাতটাতে আমরা কোনও দিন ঘুমাতে পারব বলে মনে করি না। যতদিন না আমরা ন্যায়বিচার পাই, যতদিন না অভয়া ন্যায়বিচার পায়।" কর্তব্যরত তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা অর্থাৎ আর জি করকাণ্ডের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে একাধিক কর্মসূচির ঘোষণা করতে গিয়ে জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের তরফে সাংবাদিক বৈঠকে এমনই মন্তব্য করলেন দেবাশিস হালদার। পরের মাসেই আর জি কর কাণ্ডের এক বছর। সেকথা মাথায় রেখেই এদিন ফ্রন্টের তরফে নানা কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়। এর পাশাপাশি তারা প্রত্যেক শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে ফের একবার প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আবেদন জানায়।
কর্মসূচি প্রসঙ্গে দেবাশিস হালদার বলেন, "৮ ও ৯ অগাস্টের মাঝে যে রাত, সেই রাতে ১২টা থেকে ৪টে আমরা রাস্তায় থাকব। তার আগে কলেজ স্কোয়ার থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মশাল মিছিল হবে। তারপর গোটা রাতটা আমরা শ্যামবাজারে থাকব। শ্যামবাজারে আমাদের প্রতিবাদের বিভিন্ন কর্মসূচি থাকবে। সেটা স্ট্রিট পেন্টিং, নাটক, গান, সাংস্কৃতিক নানা জিনিস হতে পারে। তার মাধ্যমে আমাদের প্রতিবাদটা আমরা এবং নাগরিক সমাজের প্রত্যেকে রাখবেন। যাঁরা কলকাতায় সবাই আসতে পারছেন না, তাঁদের প্রত্যেকের কাছে আবেদন থাকবে, সেই রাত যেদিন আমাদের সহকর্মী বোনের চিৎকারকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেই রাতে আবার আমরা জাগব। আবার আমরা মশালের আগুন জ্বালাব। আবার চিৎকার করব। আমাদের কাছে মূল হাতিয়ার, স্মৃতি। কেননা এখন মূল রাজনীতিটা কী বলুন তো, ভুলিয়ে দেওয়া। আচ্ছা, সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। সবকিছু সবাই ভুলে গেছে। আসলে যে আমরা কেউ ভুলিনি, কেউ ভুলতে পারব না, কেউ ভুলতে দেব না...সেই জায়গাটা রাখার জন্য সেইদিন রাতের বেলায়..সেটা 'রাত দখল' বলুন 'রাত জাগা' বলুন যে নামেই ডাকুন, সেই নামেই আমরা রাস্তাই থাকছি। সেই গ্রাফিটিগুলো যেগুলো অথরিটি গোটা কলকাতাজুড়ে মুছে দিয়েছে, সেগুলো আবার ফিরিয়ে আনব আমরা। আমাদের আবেদন থাকবে, প্রত্যেকে যাতে সেই প্রতিবাদের চিহ্নগুলো ফিরিয়ে আনেন।"
তিনি আরও বলেন, "তার পরদিন সকালে রাখিবন্ধন রয়েছে। তা মাথায় রেখে যাঁরা নিজস্ব কর্মসূচি নেবেন, সেই কর্মসূচিটা। ৯ অগাস্ট শনিবার বিকালে আর জি করে 'ক্রাই অফ দ্য আওয়ারের' সামনে জমায়েতের ডাক দিয়েছি। সেই জমায়েতটা মূলত থ্রেট কালচার, রেপ কালচার ...এর বিরোধী একটা অবস্থান। সেই অবস্থান আমরা 'ক্রাই অফ দ্য আওয়ারের' সামনে করতে চাই। দু'টি জায়গাতেই কেবলমাত্র জুনিয়র ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী বা মেডিক্যাল পড়ুয়ারাই নন, প্রত্যেক শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ যাঁরা প্রথম দিন থেকে আন্দোলনের সঙ্গে রয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকে নিজের নিজের মতো করে যোগ দেবেন এই আবেদন জানাতে চাই।"