প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতা, সন্দীপের দৌলতে বরাত খুলেছিল বিপ্লব-সুমনের। আর জি করে অধ্যক্ষ হওয়ার পর অবাধে মিলেছে টেন্ডার। হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতিতে ত্রিফলা যোগের দাবি করল সিবিআই।


আদালতে কী জানাল CBI? 


এক সরকারি হাসপাতাল থেকে আরেক সরকারি হাসপাতাল। সন্দীপ ঘোষের সহচর ছিলেন বিপ্লব সিংহ-সুমন হাজরারা। সন্দীপের সঙ্গেই হাসপাতাল বদল হত বিপ্লব-সুমনদের। আর জি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতিতে এবার ত্রিফলা যোগের দাবি করল সিবিআই। আলিপুর আদালতে তাদের দাবি, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে থাকাকালীন সন্দীপের সঙ্গে পরিচয় হয় ভেন্ডর বিপ্লব সিংহর। সন্দীপ ন্যাশনাল মেডিক্যালে সুপার পদে বদলি হতেই, সেখানে কাজ পেতে শুরু করেন বিপ্লব। তাঁর সূত্র ধরেই আরেক ভেন্ডর সুমন হাজরার সঙ্গে পরিচয় হয় সন্দীপের। সুমনও ন্যাশনাল মেডিক্যালে বরাত পেতে শুরু করেন। এরপর সন্দীপ আর জি কর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ হওয়ার পর যাবতীয় টেন্ডার যেত বিপ্লব-সুমনের কাছে। আর জি কর মেডিক্যালে দুর্নীতির জাল তৈরিতে প্রত্যক্ষ যোগ ছিল সন্দীপ-বিপ্লব-সুমনের। আদালতে নথি পেশ করে দাবি করেছে সিবিআই। 


আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজে আর্থিক দুর্নীতি মামলায়, সোমবার সেখানকার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ তাঁর অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী আফসর আলি এবং আরও দু-জন বিপ্লব সিংহ ও সুমন হাজরাকে গ্রেফতার করে CBI. আর মঙ্গলবার তাঁদের আদালত চত্বরে দেখা মাত্রই ক্ষোভ উগরে দিলেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে আইনজীবীদের একটা বড় অংশ। নিজাম প্যালেস থেকে আলিপুর শোনা গেল চোর-চোর ও ধিক্কার স্লোগান। চড়ও মারা হয় সন্দীপ ঘোষকে।  সন্দীপ ঘোষ সহ চারজন আদালতে পৌঁছনোর আগেই সেখানে ভিড় ছিল। ধৃতদের গাড়ি ঢুকতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। আদালতকক্ষে ধৃতদের ঢোকাতে রীতিমতো বেগ পেতে হয়। আদালতকক্ষের ভিতরেও চলে আইনজীবীদের বিক্ষোভ।

সিবিআই-এর আইনজীবী চারজনকে ১০ দিনের হেফাজতে চেয়ে দাবি করেন - আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের দুর্নীতি ষড়যন্ত্রের মাথা সন্দীপ ঘোষ। তিনি আরও বলেন, আরও তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে তাঁদেরকে দীর্ঘ জেরা করা প্রয়োজন, বিশেষ করে সন্দীপ ঘোষকে। সেই জেরাতে আরও নতুন জট খুলতে পারে। তদন্তে নতুন কোনও দিশা খুলে যেতে পারে। এমনকী মূল অপরাধ (ধর্ষণ) সম্পর্কে কোনও যোগসূত্রও পাওয়া যেতে পারে। হাইকোর্টের নির্দেশে যে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছে, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিবিআই-এর আইনজীবী আরও দাবি করেন, ধৃত তিন জনের সঙ্গে সন্দীপ ঘোষের গভীর ষড়যন্ত্র ছিল। সেটা সামনে আসা দরকার। পাল্টা সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী, ১০ দিনের হেফাজতের বিরোধিতা করে বলেন - তাঁর মক্কেল ইতিমধ্যেই একাধিকবার সিবিআই-এর কাছে গিয়ে সহযোগিতা করেছেন। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর, চারজনকে ৮ দিনের CBI হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এরপর আদালতকক্ষ থেকে সন্দীপ-সহ চারজনকে বের করার সময়েও, ফের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আদালত চত্বর। স্লোগানের পাশাপাশি সন্দীপ ঘোষকে চড়ও মারেন একজন।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: R G Kar News: চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের বিচারের দাবি, বামেদের মিছিলে উত্তেজনা