কলকাতা: আর জি কর কাণ্ডে ৪ মাস পার। এখনও অধরা বিচার। ধর্মতলার চিকিৎসকদের অবস্থানের মধ্যেই এবার শ্যামবাজারে গণকনভেনশনের ডাক। আজ সোমবার শ্যামবাজারে গণকনভেনশনের ডাক চিকিৎসক ও নাগরিক সমাজের। দুপুর ৩টেয় শ্যামবাজার বাটার সামনে গণকনভেনশনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, শুধুমাত্র বিপ্লব সিংহ কিংবা সুমন হাজরাকে কোটি কোটি টাকার সরকারি কাজের বরাত পাইয়ে দিয়ে দুর্নীতি করাই নয়, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে হাউস স্টাফের কাজ পাইয়ে দিতে, হাউস স্টাফ ও TMCP নেতা আশিস পাণ্ডেকে সামনে রেখে, মেডিক্যাল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ চূড়ান্ত দুর্নীতি করেছেন। শিক্ষা দূর্নীতির সঙ্গে তুলনীয় সেই প্রতারণার যাবতীয় তথ্য আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে তুলে ধরেছে CBI।
মেধাবী যোগ্যদের নম্বর কমিয়ে, কম নম্বরপ্রাপ্তদের নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া, হাউস স্টাফদের থেকে নিয়মিত টাকা নেওয়া, হুমকি দেওয়া...অভিযোগের শেষ নেই। আশিস পাণ্ডেকে ব্যবহার করে কার্যত রিং মাস্টারের ভূমিকায় থেকেছেন সন্দীপ ঘোষ। চার্জশিটের ২৯ নম্বর পাতায় CBI-এর তরফে দাবি করা হয়েছে, আশিস পাণ্ডের সঙ্গে যোগসাজশ করেই বেশ কয়েকজন পড়ুয়ার ইন্টারভিউ মার্ক কমিয়ে এবং বিশেষ
সুবিধা দিতে কয়েকজনের নম্বর বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ। এইভাবে কারচুপি করা হত মেধা তালিকায়, এবং নিজেদের পছন্দের লোকদের হাউস স্টাফের পদ পাইয়ে দেওয়া হত। পাশাপাশি এক্স স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে, ভোট পাইয়ে দিতেও টাকা নেওয়া হত।
এমনকী প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে ঘুষের টাকা নেওয়ার পদ্ধতিতেও এসেছে পরিবর্তন। UPI-এর মাধ্যমে আশিস পাণ্ডেকে কে কত টাকা দিয়েছিলেন, তাও চার্জশিটে তুলেছে ধরেছে CBI। ৯ অগাস্ট সকালে আর জি কর মেডিক্য়ালের নির্যাতিতা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। ওই দিনের ভাইরাল হওয়া একটি ছবিতে দেখা যায়, সেমিনার রুমের বাইরে সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে আশিস পাণ্ডেকে দেখা গেছিল। CBI সূত্রে দাবি, ওই দিন বেলা ১২টায় সল্টলেকের একটি হোটেলে উঠেছিলেন আশিস। যা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। আর চার্জশিটে CBI দাবি করেছে, কলেজ ক্যাম্পাসে রীতিমতো 'দাদাগিরি' (local dada) করে, সন্দীপ ঘোষের সমর্থনে পড়ুয়াদের একজোট করতেন। এমনকী যাঁরা সন্দীপ ঘোষ ও আশিসকে সমর্থন করতে চাননি, তাঁদেরকে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু, CBI-এর দাবি এত অপরাধ সত্ত্বেও সন্দীপ ঘোষ ও আশিস পাণ্ডের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করতে পারছে না তারা। কারণ তাঁরা দু'জনেই সরকারি কর্মী। গত ১০ তারিখ সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে, আর্থিক দুর্নীতির ক্ষেত্রেও চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। তবে, দুই সরকারি কর্মী ও আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার জন্য রাজ্য সরকারের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত তা মেলেনি। পাল্টা রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল দাবি করেন, তাঁরা এখনও CBI-এর তরফে এরকম কোনও আবেদন পাননি।
আরও পড়ুন: Sabyasachi Dutta: বাগুইআটির তৃণমূল কাউন্সিলরের পাশে দাঁড়িয়ে প্রোমোটারকেই নিশানা সব্য়সাচী দত্তের