উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: স্বপ্ন দেখেছিলেন একসঙ্গে ঘর বাঁধার। দীর্ঘ কয়েকবছরের সম্পর্ক তাঁদের। এবছরই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুঃস্বপ্নের সেই ৯ অগাস্ট ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে সবকিছু। প্রিয় মানুষকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত সেই ব্যক্তিও, যাঁর সঙ্গে বিয়ের দিন পর্যন্ত ঠিক হয়ে গেছিল। আরজি করের নির্যাতিতার বিশেষ বন্ধুর কথায় উঠে এল অতিসক্রিয়তার প্রসঙ্গও।
এবিপি আনন্দ: কখন জানতে পারলেন প্রথম?
নির্যাতিতার বিশেষ বন্ধু: ১১টা নাগাদ কাকু আমায় ফোন করেন। বলেন যে আত্মহত্যার একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা ওখানে পৌঁছে দেখতে পাই, খুব ভিড়। আমি রীতিমতো ঠেলে ভেতরে যাই। আমাদের সেমিনার রুমের উল্টো দিকে একটি ঘরে বসানো হয়। প্রায় সাড়ে ৬টা থেকে ৭টা নাগাদ আমরা FIR দায়ের করি। যদিও আমরা পরে জানতে পারি, ওটা নাকি ১১টা ৪৩-এ দায়ের হয়েছে।
এবিপি আনন্দ: একটা অভিযোগ শুনছিলাম যে ওখানে এসে কয়েকজন বলেন এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে বলে?
নির্যাতিতার বিশেষ বন্ধু: তিনজন ছেলে আসে এবং তাঁরা FIR দেখতে চায়। তখন বলে যে আমরা কলেজ থেকে আসছি। আমার বন্ধুরা বলে যে FIR এখন দেখাব না। আপনারা বাইরে বসে থাকুন। তারাও অনেকক্ষণ বাইরে বসেছিল।
এবিপি আনন্দ: FIR কী করেছেন সেটা দেখার জন্য ঢুকে পড়েছিল?
নির্যাতিতার বিশেষ বন্ধু: তারা আসতে চাইছিল। কিন্তু আসতে দেওয়া হয়নি।
এবিপি আনন্দ: এরপর থানা থেকে বাড়িতে যান?
নির্যাতিতার বিশেষ বন্ধু: না, থানা থেকে কাকু সহ পরিবারের বাকিদের পুলিশ নিয়ে যায় আরজি করে যেখানে ময়নাতদন্ত হয়েছে। কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। একটা হুড়মুড় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। আরজি করে গিয়ে তখন দেখছি প্রচুর পুলিশ, প্রচুর লোক। শববাহী গাড়িটা অনেকক্ষণ আটকে ছিল। তারপর সেই গাড়ি কার্যত করিডর করে বেরিয়ে যায়। কাকিমাকে গাড়িতে তুলতে গেলে প্রচণ্ড ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে যাই। বাড়িতে আসার পরেও দেখি আশেপাশে প্রচুর পুলিশ। কোনওক্রমে বলে তারপর উপরে উঠি।
এবিপি আনন্দ: শেষকৃত্য কেন্দ্র করেও অনেক প্রশ্ন উঠে এসেছে, আপনি যেতে পেরেছিলেন সঙ্গে?
নির্যাতিতার বিশেষ বন্ধু: আগে শববাহী গাড়ি এবং কাকু বেরিয়ে যান। তখন গিয়ে দেখি প্রচুর পুলিশ ঘিরে রেখেছে সৎকারের জায়গা। দুটো দেহ লাইনে ছিল। আমরা যখন বেরোই দেখি, জায়গাটা ফাঁকা হয়ে গেছে।
এবিপি আনন্দ: একমাত্র নির্যাতিতার দেহ চুল্লিতে দেওয়া পর্যন্ত যতটুকু উদ্যোগ, তাই তো?
নির্যাতিতার বিশেষ বন্ধু: অতিসক্রিয়তা তো মনে হয়েছেই। আমি নই, আমাদের বন্ধুদের সবারই মনে হয়েছে।
এবিপি আনন্দ: ডেথ সার্টিফিকেট বা টাকা দেওয়া, কেউ সই করে দিয়েছে, এগুলো তো আপনার জানা?
নির্যাতিতার বিশেষ বন্ধু: এই ঘটনাটা আমি প্রত্যক্ষ করিনি কিন্তু পরে শুনেছি।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।