সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: তৃণমূলের এক জেলা পরিষদ প্রার্থীর 'উইনিং সার্টিফিকেটে' নিষেধাজ্ঞা জারি করল রায়গঞ্জ জেলা আদালত (Raiganj District Court)। ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল রাজনৈতিক মহলে। উত্তর দিনাজপুর (Uttar Dinajpur) জেলার হেমতাবাদের ২০ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে জয়ী হন তৃণমূলের প্রার্থী (Winning TMC Candidate) সেলিমা খাতুন। ওই আসনের বিজেপি প্রার্থী রমা বর্মনের অভিযোগ ছিল,অবৈধ ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। সেই অনুযায়ী বিজেপি প্রার্থীর পক্ষ থেকে রায়গঞ্জ জেলা আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। গত শুক্রবার রায়গঞ্জ জেলা আদালতের বিচারক পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী রায় দেন, ওই তৃণমূল প্রার্থী তাঁর 'উইনিং সার্টিফিকেট' আপাতত কোথাও দেখাতে বা জমা করতে পারবেন না।


কেন অভিযোগ?
বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, তৃণমূল প্রার্থী সেলিমা খাতুন জনসম্পদ দফতরে চতুর্থ শ্রেণীর চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী। পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, কোনও সরকারি দফতরের গ্রুপ ডি পদে চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না, এমনই দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। সেই অনুযায়ী রায়গঞ্জ জেলা আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয় বিজেপি প্রার্থীর পক্ষ থেকে। শুক্রবার রায়গঞ্জ জেলা আদালতের বিচারপতি পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী ওই তৃণমূল প্রার্থীর 'উইনিং সার্টিফিকেট' প্রাথমিকভাবে কোথাও দেখাতে কিংবা জমা করতে পারবে না বলে রায় দেন। রায় নিয়ে আইনজীবী উৎপল কুমার বাগচির মতে," হেমতাবাদ ২০ নম্বর জেলা পরিষদ আসনের তৃণমূল প্রার্থী সেলিমা খাতুন জনসম্পদ দফতরের গ্রুপ ডি পদে ক্যাজুয়াল স্টাফ হিসেবে কর্মরত। তিনি পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না, এই মর্মে মামলা দায়ের করেছিলেন রমা বর্মন। জেলা আদালতের বিচারক ওই প্রার্থীর উইনিং সার্টিফিকেট কোথাও ব্যবহার করতে পারবে না বলে স্টে অর্ডার জারি করেছেন।'
গোটা ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য অভিজিৎ জোশী বলেন, 'নমিনেশন জমা করার সময় আমরা জানতে পারি যে নির্বাচন কমিশনের যা গাইডলাইন, তাতে বলা রয়েছে কোনও সরকারি কর্মচারী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। একই সঙ্গে জেনেছিলাম, উনি একজন গ্রুপ ডি স্টাফ। অর্থাৎ সরকারি কর্মচারী। তা সত্ত্বেও নমিনেশন ফাইল করেছেন। তার পরই আদালতের দ্বারস্থ হই। সেই মামলায় স্থগিতাদেশ হয়েছে।'
কিন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্ক্রুটিনিতেও কী করে বিষয়টি ধরা পড়ল না? এই নিয়ে জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে তৃণমূলের যোগ-সাজসের অভিযোগ আনেন বিজেপি নেতারা। অন্য দিকে সেলিমা খাতুনের স্বামী মজিবুর রহমান বলেন," আমার কাছে এ ধরনের কোন তথ্য এখনও পৌঁছয়নি। এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তবে আমার স্ত্রীর মনোনয়ন যদি অবৈধ হত, তাহলে তা  স্ক্রুটিনিতেই ধরা পড়তো। তাঁকে উইনিং সার্টিফিকেট নির্বাচন কমিশন দিয়ে দিয়েছে। বিজেপি যেখানে ভোটে লড়াই করে জিততে পারে না, সেখানে হয়তো আমাদেরই কিছু লোক তাঁদের সঙ্গে মিলে এ সমস্ত অপপ্রচার ছড়াচ্ছে।' একই সঙ্গে সংযোজন, 'যদি সত্যিই কোর্টের এমন কোনও নির্দেশ আমার কাছে আসে, তা হলে আমরাও আইনি পথে লড়ব।' গোটা ঘটনা নিয়ে রায়গঞ্জের মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতি জানিয়েছেন,  বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। তাই এখনও কোনও মন্তব্য করা যাবে না।


আরও পড়ুন:টিভিতে ডার্বি দেখেছি, এবার ভরা গ্যালারির সামনে ডার্বিতে গোল করলাম: নন্দকুমার