কলকাতা: প্রায় সাড়ে চার বছর পর ডার্বি জিতল ইস্টবেঙ্গল। ২০১৯-এর ২৭ জনুয়ারি শেষবার চিরপ্রতিদ্বন্দী ক্লাবকে হারিয়েছিল তারা। তার পর থেকে টানা আটটি ডার্বিতে প্রতিবারই হেরে জ্বালা-যন্ত্রণায় বিদ্ধ হয়েছিল বারবার। শনিবার চলতি ডুরান্ড কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে সেই যন্ত্রণার অবসান হল। প্রাক্তন আইএসএল জয়ী কোচ কার্লোজ কুয়াদ্রাতের প্রশিক্ষণে নতুন মরশুম শুরু করা ইস্টবেঙ্গল প্রথম ডার্বিতেই কলকাতার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দীর পুরনো শত্রুতা ফিরিয়ে আনার ইঙ্গিত দিয়ে রাখল।


কলকাতা ডার্বি চিরকালই জন্ম দিয়েছে ভারতীয় ফুটবলের তারকাদের। এ বারের ডার্বি থেকে উঠে এলেন এক নতুন নায়ক, সুদূর তামিলনাড়ু থেকে এসে যিনি হয়ে উঠলেন লাল-হলুদ বাহিনীর নয়নের মণি। তিনি নন্দকুমার শেখর। গত জুনে যাঁকে তিন বছরের চুক্তি করে নিয়ে আসে কলকাতার ক্লাব। গত মরশুমে ওডিশা এফসি-র হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখানো এই তামিল ফুটবলারের গোলেই সাড়ে চার বছরের খরা কাটল ইস্টবেঙ্গলে।   


গত আইএসএলে ছ’টি গোল করেছিলেন নন্দ। হিরো সুপার কাপেও পাঁচটি ম্যাচে চারটি গোল করে দলকে চ্যাম্পিয়ন হতে সাহায্য করেছিলেন তিনি। একটিতে জোড়া গোল ছিল তাঁর। মূলত উইং দিয়ে আক্রমণে উঠে প্রতিপক্ষের রক্ষণে ফাটল ধরিয়ে গোল করার ক্ষমতাসম্পন্ন এই ফুটবলারকে সই করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন কুয়াদ্রাতই।


ইস্টবেঙ্গলে যোগ দিয়ে তখন নন্দকুমার বলেছিলেন, ''২০১৭-য় যখন চেন্নাই সিটির হয়ে খেলতাম তখন পেশাদার ফুটবল জীবনের প্রথম গোল এই ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধেই করেছিলাম। এখন, এই ঐতিহাসিক ক্লাবে খেলার সুযোগ পেয়ে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে চাই। ক্লাবকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে চাই। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে মাঠে নেমে সমর্থকদের ভালবাসা পেতে চাই।''


সেদিন লাল হলুদের বিরুদ্ধে গোল করেছিলেন। আজ যুবভারতীয় লাল হলুদ সমর্থকদের সামনে লাল হলুদ ক্লাবের জার্সি গায়ে গোল করে সুদে আসলে সব মিটিয়ে দিলেন নন্দকুমার। জীবনের প্রথম ডার্বিতে নেমেই তা করে দেখিয়ে দিলেন তিনি। ৬০ মিনিটের মাথায় অসাধারণ এক গোল করে দলকে বহু আকাঙ্খিত জয় এনে দিলেন তিনি। হয়ে উঠলেন ইস্টবেঙ্গলের নতুন ‘হিরো’।  শনিবার ম্যাচের পর তিনি বলেন, ''ওডিশার হয়ে খেলার সময় অনেকবার টিভিতে ডার্বি দেখেছি। আজ নিজে ভরা গ্যালারির সামনে ডার্বি খেললাম, গোলও করলাম। খুবই খুশি আমি। পরের ম্যাচে আমরা আরও ভাল খেলব আমরা।''