সুদীপ চক্রবর্তী ও শুভেন্দু ভট্টাচার্য, ইসলামপুর ও কোচবিহার: দক্ষিণবঙ্গে (South Bengal) প্রখর রোদ, হাঁসফাঁস করা গরম। উত্তরবঙ্গে (North Bengal) আবার উল্টো ছবি। আচমকাই ঝড় (Storm) ও শিলাবৃষ্টিতে (Hailstorm) লন্ডভন্ড উত্তর দিনাজপুর (Uttar Dinajpur)। কোচবিহারেও (Cooch Behar) গত কয়েকদিন ধরে তুমুল বৃষ্টি। চৈত্রের শেষে প্রকৃতির রোষে নাজেহাল দুই জেলার বাসিন্দা।


বৃষ্টিতে সমস্যায় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা


গতকাল দুপুরে উত্তর দিনাজপুরে নাগাড়ে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি তছনছ হয়ে যায় ইসলামপুরের একাধিক এলাকা। ভেঙে পড়ে একের পর এক কাঁচা বাড়ি। ঘরবাড়ি হারিয়ে দুর্যোগের মধ্যেই রাস্তায় নেমে আসে বহু পরিবার। বৃষ্টিতে বইপত্র ভিজে যাওয়ায় মাথায় হাত বহু উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর।


কেয়া বিশ্বাস নামে এক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী জানিয়েছেন, ‘ঝড়বৃষ্টিতে ঘর হারিয়েছি। বইখাতা ভিজে গিয়েছে। ভেঙে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া ১০ হাজার টাকার মোবাইল ফোনও। ১৬ এপ্রিল উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা আছে। কীভাবে পরীক্ষা দেব বুঝতে পারছি না।’ 


গতকালই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন ইসলামপুরের বিডিও ও উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল সভাপতি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরেও কোনও ত্রাণ-সাহায্য মেলেনি।


আরও পড়ুন আচমকা শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষের জমি-বাসস্থান, মাথায় হাত গ্রামবাসীদের


লক্ষ্মী বিশ্বাস নামে এক স্থানীয় মহিলা বলেছেন, ‘লোকজন দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। কিন্তু এখনও কিছু সাহায্য পাইনি। এখনও খোলা আকাশের নিচে কাটাতে হচ্ছে অনেককে। খেতে পর্যন্ত পাচ্ছি না।’


পন্ডিতপোঁতা ২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের প্রতিনিধি ক্ষীতীশ চন্দ্র সিংহ বলেছেন, ‘পঞ্চায়েতের কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর ব্লক প্রশাসন থেকে দু-একটি জায়গা পরিদর্শন করে গিয়েছে। আমরা আবেদন করেছি, মাথা গোঁজার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক বাড়িতে একটি করে পলিথিন ও ত্রাণ-সাহায্য দেওয়ার জন্য।’


বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কোচবিহার


অন্যদিকে, গত কয়েকদিনের নাগাড়ে বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কোচবিহার। বৃষ্টির জলে ডুবে গিয়েছে একের পর এক কৃষিজমি। জমা জলে পচে নষ্ট হচ্ছে পাট ও অন্যান্য ফসল। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত কোচবিহারে প্রায় ৩,০০০ হেক্টর জমির পাট নষ্ট হয়েছে। বাংলা শস্য বিমা যোজনার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।