কলকাতা: রাজপুর-সোনারপুর (Rajpur-Sonarpur) পুরভোটে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আগেই তৃণমূল বিধায়ক ও তৃণমূল নেতার সংঘাত প্রকাশ্যে। সোনারপুর শহর তৃণমূলের (TMC) সভাপতি রঞ্জিত রায়ের (Ranjit Roy) ক্ষোভ, তাঁর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই প্রার্থী তালিকা তৈরি করে পাঠিয়েছেন সোনারপুর (South Sonarpur) দক্ষিণের বিধায়ক। বিধায়ক লাভলি মৈত্রর দাবি, তালিকা প্রকাশের আগে সাংবাদিক বৈঠকে ক্ষোভপ্রকাশ দলবিরোধী কাজ। ওই তৃণমূল নেতা আগেও তাঁর বিরোধিতা করেছেন বলে দাবি বিধায়কের। তৃণমূল নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।


পুরভোটে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল তৃণমূল। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানালেন, দার্জিলিংয়ের প্রার্থীতালিকা পরে ঘোষিত হবে’। তিনি বলেন, ‘১০৮ পুরসভার প্রার্থীতালিকায় নেই কোনও বিধায়ক। কোনও বিধায়ক লড়বেন না বাকি পুরভোটে। একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে সুযোগ নয়। পুরভোটে নতুনদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যাঁকে প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে তাঁকেই সমর্থন করতে হবে। ক্লাসে সবাই ফার্স্টবয় হতে পারে না। প্রার্থীতালিকায় নবীন-প্রবীণ সমন্বয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। 


অন্যদিকে, প্রার্থীতালিকা ঘোষণার পরেই অশোকনগরে তৃণমূলের একাংশের বিক্ষোভ। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সুমন পালকে নিয়ে অসন্তোষ। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ তৃণমূলের একাংশর। একাধিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ঘোষিত প্রার্থী সুমন পাল, অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। 


পাশাপাশি, ভবানীপুরে (Bhawanipore) নিজের ওয়ার্ডের লোককেই চাই। এমন পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুরের (Kharagpur) ছ' নম্বর ওয়ার্ড। পৌরসভা নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণার আগেই নীল সাদা রঙের এই পোস্টারকে কেন্দ্র করে শুরু হয় রাজনৈতিক তর্ক। 


জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর পৌরসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগেই ছ' নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় দেওয়ালে দেওয়ালে লাগানো রয়েছে পোস্টার। নীল সাদা রঙের সেই পোস্টারে লেখা রয়েছে, 'ভবানীপুরে নিজের ওয়ার্ডের লোককেই চাই।' পোস্টারের মাঝ বরাবর দুটি পায়রার ছবি দিয়ে আরও লেখা রয়েছে 'এলাকার অধিবাসীবৃন্দ।'


খড়গপুরের ছ' নম্বর ওয়ার্ডের এই পোস্টারকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। পোস্টার প্রসঙ্গে খড়গপুর শহর বিজেপির মণ্ডল সভাপতি দীপসোনা ঘোষ বলেন, 'ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষই ওই পোস্টার লাগিয়েছেন। তাঁরা বাইরের মানুষকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান না। সাধারণ মানুষের এই সিদ্ধান্তকে সঠিক বলেই মনে করি বিজেপির পক্ষ থেকে। তাছাড়া, আমার নিজেও ব্যক্তিগতদিক থেকে মত, ওয়ার্ডের মানুষই প্রার্থী হলে ভালো হয়।' তিনি আরও বলেন, 'এই কাজ তৃণমূলের একাংশ করছেন ওই স্টিকারের নীল-সাদা রং দিয়ে। তৃণমূলই যে এবার তৃণমূলকে ইশারা করছে, তা পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে। তৃণমূলের একাংশ সরাসরি চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিচ্ছে। যেভাবে তিনি ছ' নম্বর ওয়ার্ডে লাফিয়ে ওখানকার প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করছেন, তার বিরুদ্ধেই তৃণমূলের একাংশের এই পদক্ষেপ। তিনি নিজের ইচ্ছামতো যেকোনও ওয়ার্ডে যাচ্ছেন। আগেও বাসিন্দা না হওয়া সত্বেও কুড়ি নম্বর ওয়ার্ডে গিয়েছেন। সাধারণ মানুষের গর্জে ওঠার দরকার ছিল। এবার তাঁরা গর্জে উঠেছেন।'