নান্টু পাল ও আবির ইসলাম, বীরভূম: বগটুইয়ের ঘটনার নৃশংসতায় শিউরে উঠেছিল গোটা রাজ্য। শুরু হয়েছিল প্রবল রাজনৈতিক তরজা। শেষ পর্যন্ত ওই ঘটনায় গ্রেফতার হন অন্যতম অভিযুক্ত আনারুল হোসেন। বৃহস্পতিবার সেই আনারুল হোসেনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন। বৃহস্পতিবার তাঁকে রামপুরহাট সংশোধনাগার থেকে সিউড়ি সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময়েই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আনারুল দাবি করেন, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। সময় এলে সব ষড়যন্ত্রকারীদের নাম বলবেন বলেও জানান। তারপরেই ফের শুরু হয়েছে তরজা।  


কী বলেছেন আনারুল?
এদিন আনারুল হোসেন বলেন, 'আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। সময় এলে নাম বলব ষড়যন্ত্রকারীদের।' তাঁর দাবি, ঘটনাস্থল থেকে তাঁর বাড়ি ৫-৭ কিলোমিটার দূরে। ওই ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনওভাবেই যুক্ত নন। তখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ষড়যন্ত্রকারী কারা? তখন আনারুল বলেন, 'ষড়যন্ত্রকারী কিছু আছে। সময়ে নাম বলব।' যদিও এই কথা উড়িয়ে দিয়েছেন বগটুইকাণ্ডে স্বজনহারা মিহিলাল শেখ। তিনি বলেন, 'নিজেকে বাঁচাতে মিথ্যা বলছেন আনারুল, পাল্টা দাবি।' 


এর আগে এক এক বার এক একরকম দাবি করেছেন আনারুল হোসেন। এর আগে তিনি বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন। কখনও নিজেকে নির্দোষ দাবি করে, তাঁকে ঘটনার সঙ্গে ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন আনারুল। এবার ষড়যন্ত্রকারীদের নাম ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগ আনারুলের মুখে। 


পাল্টা তোপ বগটুইকাণ্ডে স্বজনহারা মিহিলাল শেখের। তিনি বলেন, 'আমাদের বগটুই গ্রাম থেকে আনারুলের বাড়ি ২-৩ কিলোমিটার। আনারুল নিজেকে বাঁচাতে এসব কথা বলছেন। হিম্মত থাকলে বলে দিন কারা জড়িত। আইন তদন্ত করে দেখবে।' 


চার্জশিটে নাম:
আনারুল নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও সম্প্রতি, সিবিআইয়ের চার্জশিট বলছে সম্পূর্ণ অন্য কথা। সিবিআই সূত্রে দাবি, চার্জশিটে বলা হয়েছে, তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনের উস্কানিতেই বগটুই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এমনকি, বগটুই গ্রামে অগ্নিকাণ্ডের পর পুলিশের দেরিতে পৌঁছনোর নেপথ্যেও আনারুলের ভূমিকা ছিল।  


বিজেপির কটাক্ষ:
বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, 'আনারুল যদি সত্যিই নিজেকে অপরাধী নয় বলে মনে করেন, তাহলে যাঁদের কথায় তিনি করেছেন তাঁদের নাম বলে দিন। আমাদের মনে হয় সিবিআই সঠিক তদন্ত করছে। আনারুলের সৎ সাহস থাকলে তাহলে আসল অপরাধীদের নাম বলুন।'


এবিষয়ে, রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করা হলে তিনি জানান, বিচারাধীন বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চান না। 


আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টিতে কোচবিহারের নদীতে ভাঙন, নদীগর্ভে বাড়িঘর, কৃষিজমি