কলকাতা : সরকারি রেশন বন্টন ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে নির্দিষ্ট এক মডেলে চালানো হয়েছে দুর্নীতি। রেশন বন্টন দুর্নীতির (Ration Distribution Scam) তদন্তের মাঝে ইডির (ED) দাবি, কৃষকদের ঠকিয়ে এজেন্ট মারফত সমবায় সমিতির সাহায্যে চালানো হত পরিকল্পনামাফিক এক দুর্নীতি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এজেন্ট মারফত কৃষকের থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (MSP) ২০০ টাকা কমে কেনা হত ধান। যে ধান কিনে নেওয়ার পরে সেই ধান সমবায় সমিতিকে বেচতেন মিল মালিকরা। ইডি-র চাঞ্চল্যকর দাবি, তারপর বিনিময়ে সহায়ক মূল্য যেত মিল মালিকদের 'ভুয়ো' কৃষকদের অ্যাকাউন্টে। বছরের পর বছর, এভাবেই বঞ্চিত করা হয়েছে দরিদ্র কৃষকদের (Farmers)। দুর্নীতির ফাঁদে ফেলে ঠকানো হয়েছে তাঁদের, দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
ধানেও দুর্নীতির 'পোকা'-ই শুধু লাগেনি, ইডির দাবি সেই যোগ ছিল একেবারে শীর্ষমহল পর্যন্ত। যে দাবির পিছনে তাঁদের ভিত্তি, মিল মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ইডির তরফে রেশন বন্টন দুর্নীতির গোড়ায় পৌঁছতে চালানো হচ্ছে অভিযান। এর মাঝেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছে, অভিযানের পর জনৈক মিল মালিকের স্বীকারোক্তি, 'মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriyo Mullick) নির্দেশে তাঁর পরিচারকের নামে স্থাবর সম্পত্তি দানপত্রও করে দিতে হয়েছিল'। পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদে মিল মালিক কবুল করেছেন, 'পাশাপাশি ৫০ লক্ষ নগদ দিতে হয়েছিল ৩ সন্দেহভাজন ভুয়ো কোম্পানির অ্যাকাউন্টে', দাবি ইডির।
রেশন বন্টন দুর্নীতির সামনে নেমে ইতিমধ্যে গম-আটা লুঠের তথ্য সামনে এনেছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছিল, মিল থেকে বেরিয়ে যাওয়া আটা ডিস্ট্রবিউটার, ডিলারদের মাধ্যমে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ লুঠ হয়ে তারপর পৌঁছেছে সাধারণের কাছে।
ইতিমধ্যে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বাকিবুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে ইডি। হেফাজতে রেখে তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর দাবিও সামনে রাখছে ইডি। কীভাবে গম বন্টনে দুর্নীতি হয়েছে, সেটা আগেই জানিয়েছে ইডি। পাশাপাশি কয়েকটি ভুয়ো সংস্থা খুলে কীভাবে রেশন বন্টন দুর্নীতিতে কালো টাকা সাদা করা হয়েছে, সেই তথ্যপ্রমাণও ইতিমধ্যে আদালতের সামনে পেশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন- শিক্ষক নিয়োগ মামলার তদন্ত শেষ করতে এবার সুপ্রিম কোর্টের ডেডলাইন