কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: নিয়োগ বিতর্কে এবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) দিকে অভিযোগের আঙুল তুলল বিজেপি। ফেসবুকে ব্রাত্য বসু ও দক্ষিণ দমদম পুরসভার (South Dumdum Municipality) তৃণমূল কাউন্সিলরের পুরনো ভিডিও পোস্ট বিজেপি নেতার। সেখানে চাকরি দেওয়া নিয়ে মন্তব্য দু’জনের গলায়। আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে পুরনো ভিডিও দিয়ে অনর্থক জলঘোলা করা হচ্ছে। বিবৃতি শিক্ষামন্ত্রীর (Education Minister)।


ব্রাত্য বসুর দিকে অভিযোগের আঙুল: নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় গ্রেফতার করা হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। এবার বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর দিকেও আঙুল তুলল বিজেপি। বুধবার ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন বঙ্গ বিজেপির মিডিয়া ইনচার্জ তুষারকান্তি ঘোষ।  সেখানে তিনি লিখেছেন, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ঘনিষ্ঠ দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজু সেন শর্মা বক্তব্য। বিজেপি নেতার পোস্ট করা ভিডিওয়, দক্ষিণ দমদম পুরসভার এলাকার তৃণমূল নেতা তথা কাউন্সিলরকে শিক্ষকের চাকরি দেওয়া নিয়ে মন্তব্য করতে শোনা যাচ্ছে। উঠে আসছে ব্রাত্য বসুর প্রসঙ্গও। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ।


ভিডিওতে শোনা যাচ্ছে, দমদম পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজু সেন শর্মা বলছেন, “আরে, ব্রাত্য বসুর সঙ্গে যদি চলা না যায়, তাহলে ব্রাত্য বসুর দেওয়া, ওই ১০০ ছেলের, এখানে যাঁরা আমরা আছি, আমরা যখন প্রাইমারি টিচারের জন্য দাদাকে নাম দিয়েছি, দাদা আমাদের যে কটা কাজ দিয়েছে বা আমাদের যে কটা রেকমেন্ডেশন ছিল, তার থেকে ৩-৪ গুণ বা ১০ গুণ তাঁর রেকমেন্ডশনের ছেলেদের চাকরি দিয়েছিল। কেন কাজ করে দিতে পেরেছিল? মাথার ওপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর ব্রাত্য বসুদের আশীর্বাদ ছিল বলে।’’ বিজেপি নেতার পোস্ট করা ভিডিওয় ব্রাত্য বসুকেও চাকরি প্রসঙ্গে বলতে দেখা যাচ্ছে। “কিন্তু চাকরিটা শুধু তৃণমূলের ছেলেমেয়েরাই পাবে। একটা তৃণমূলের ছেলে ছাড়া পাবে না। একটা...সিম্পল...আর কিছু নয়। কীভাবে পাবে, কোথায় পাবে, কেন পাবে, সেসব আমি বলব না। কিন্তু এটা হবে। এটা হবে। এটা হয়েছে এবং আগামীদিনেও হবে।’’


 



ভাইরাল ভিডিও নিয়ে সাফাই দিয়েছেন তৃণমূল নেতা। রাজু সেন শর্মার দাবি, “প্রবীর পাল বলে একজন বিজেপিতে গিয়েছিলেন। তাই রাজনৈতিক স্টান্টের জন্য এইসব কথা বলেছিলাম। চাকরি দেওয়ার ঘটনা সত্যি? না সত্যি নয়। মিথ্যে তথ্য পরিবেশন করেছেন? যা খুশি বলতে পারেন, আমি চুপ করে যাব। আমাদের মতো রাজনৈতিক নেতাদের অনেক কথাই বলতে হয়।’’ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, “একটি পুরনো ভিডিও নিয়ে এখন ঘোলা জলে নেমে অনর্থক বিতর্ক তোলা হচ্ছে, যেটি আবার ইতিমধ্যেই আদালতে বিচারাধীন। তবুও অন্তত এটুকু বলা যেতে পারে যে, যে সময়ে শিক্ষা বিভাগে চাকরির কথা বলা হচ্ছে, সে সময় শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে আমি ছিলাম না। কাজেই আমার মন্তব্য করা অনধিকার চর্চা করা হবে। প্রসঙ্গত একথাও সত্যি যে, স্থানীয় স্তরে কোন পার্টি নেতা কী মন্তব্য করলেন, তার উত্তর রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষে দেওয়া খালি অসম্ভব নয়, অসমীচীনও। যিনি বলেছেন, তিনিই ব্যাখ্যা করে বলতে পারবেন ঠিক কোথায়, কবে এবং কী চাকরি দেওয়া হয়েছে।’’


আরও পড়ুন: Arpita Mukherjee: অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার প্রায় ২৮ কোটি টাকা, মিলল ৬ কেজিরও বেশি সোনা