কলকাতা: রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে চলছে জোর চর্চা। একের পর এক নাম উঠে আসছে, যা নিয়ে শোরগোলও কিছু কম হচ্ছে না। সেই প্রসঙ্গে এবার একের পর বিতর্কিত মন্তব্য করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। শনিবারই 'কোটায় চাকরি দেওয়া' নিয়ে প্রয়াত বাবা কমল গুহর প্রসঙ্গ টেনেছিলেন তিনি। এবার সেই মন্তব্যর প্রেক্ষিতে আনলেন নিজের দলের প্রসঙ্গও। 


রবিবারও প্রয়াত বাবা কমল গুহকে নিয়ে কার্যত নিজের মন্তব্যে অনড় মন্ত্রী উদয়ন গুহ। তিনি বলেন, 'বাম আমলে কোটা সিস্টেমে চাকরি হত, ফরওয়ার্ড ব্লক ভাগ পেয়েছে। কোচবিহারের জেলা সম্পাদক হিসেবে বাবাকেও সেই লিস্ট এনডোর্স করতে হয়েছে। বাবার মৃত্যুর পর জেলা সম্পাদক থাকাকালীন আমিও সেই লিস্ট এনডোর্স করেছি। যোগ্যরা বঞ্চিত হচ্ছে জেনেই দলের স্বার্থে দলীয় কর্মীদের চাকরি দিতে হয়েছে। সুযোগ পেলে পার্টির ছেলেদের এখনও আমরা চাকরি দিই। আমিও মন্ত্রী হিসেবে ৩ জনকে অ্যাটেন্ডেন্ট হিসেবে নিয়োগ করেছি'।             


যদিও উদয়নের মন্তব্য নিয়েই বিতর্ক জারি রয়েছে। তবে কমল গুহ বিতর্কে বাবার হয়ে ব্যাট ধরলেন উদয়নের ছেলে সায়ন্তন। তিনি বলেন, 'অনেক গরিব মানুষকে দাদু সাহায্য় করেছেন। প্রয়োজন মনে করলে চাকরি দিয়েও তাঁদের সাহায্য করেছেন।' এরপরই রীতিমতো চ্যালেঞ্জের সুরে বামেদের নিশানা করেছেন উদয়ন-পুত্র। তিনি বলেন, 'বাম নেতারা বুকে হাত রেখে বলুক, কোটা সিস্টেমে চাকরি হত না। বাম আমলে হোলটাইমারদের অগ্রাধিকার দেওয়া হত না, পারলে বলুক'। 


আরও পড়ুন, 'দলের স্বার্থে দুর্নীতি করেছেন কমল গুহ', বিস্ফোরক উদয়ন গুহ


ফরওয়ার্ড ব্লকে রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'এ হচ্ছে সত্যিকারের কুলাঙ্গার। জননেতা, কৃষি আন্দোলনে অনেক কাজ করেছেন। সেই বাবার নামে যে ছেলে এমন বলতে পারে, সে কুলাঙ্গার।' নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বামেরা যখন লাগাতার তৃণমূলকে নিশানা করছে, ঠিক তখনই বাম জমানায় চিরকুটে চাকরির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে শাসকদল। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী-র কলেজে নিয়োগ নিয়ে দুই শিবিরের চাপানউতোর এখন চরমে। আর সেই আবহে বাম জমানার নিয়োগ ব্যবস্থাকে নিশানা করতে গিয়ে প্রয়াত বাবাকেই কার্যত দুর্নীতির জালে জড়িয়ে দিলেন দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ। 
 


উদয়নের মন্তব্য নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে বিঁধেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি বলেন, ''পিসি-ভাইপোর কাছে ভাল থাকার জন্য প্রয়াত বাবাকেও ছাড়ছেন না'।