কলকাতা: আদালতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে 'রাজসাক্ষী' তাঁরই জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। আর এই কথা প্রকাশ্যে আসতেই এবার জোর কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এদিন অধীর চৌধুরী বলেছেন, 'জামাইয়ের মনে হয়েছে শ্বশুর মশাইয়ের বেশি বেশি অন্যায় হয়েছে তাই সাক্ষী দিচ্ছে। বাংলায় ঘরে ঘরে প্রতিবাদ হোক আমরা চাই। পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে দিয়ে এই সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা সফল হতে পারে না। বাংলায় দুর্নীতি মুক্ত কবে হবে বাংলার মানুষ অপেক্ষায়।'
ইডি সূত্রে খবর, বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন রাজসাক্ষী হতে চেয়ে আবেদন পার্থর জামাইয়ের। ব্যাঙ্কশাল আদালতে ইডির স্পেশাল কোর্টে আবেদন কল্যাণময় ভট্টাচার্যর। কীভাবে দুর্নীতি হয়েছে, কোথায় গিয়েছে দুর্নীতির টাকা কোর্টকে জানাতে চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। কোনও চাপ নেই, সদিচ্ছায় কোর্টকে জানাতে চান পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের জামাই। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে 'রাজসাক্ষী' কল্যাণময়র বয়ান রেকর্ড হবে। রাজসাক্ষী হওয়ার কোনও রাড়তি সুবিধা পাবেন না কল্যাণময় ভট্টাচার্য।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শ্বশুরমশাই গ্রেফতার হওয়ার পর, নাম জড়িয়েছিল তাঁরও। নাম রয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সির চার্জশিটে এবার সেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে, 'রাজসাক্ষী' হতে চাইলেন তাঁরই জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জোড়া ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার ও তার পর প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর ED-র রেডারে আসে তাঁর প্রয়াত স্ত্রীর নামে পিংলায় তৈরি হওয়া, বাবলি চট্টোপাধ্যায় মেমোরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। যার চেয়ারম্যান পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য।
ED-র চার্জশিটে দাবি করা হয়েছিল, প্রথমে স্কুলের জমি কেনা ও পরে কনস্ট্রাকশনের জন্য নগদে ১৫ কোটি টাকা দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই টাকা খরচ করা হয়েছিল তাঁর জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্যের মাধ্যমে। কল্য়াণময় চট্টোপাধ্য়ায় রাজসাক্ষী হলে কি পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় আরও বিপাকে পড়বেন? তাঁর বিরুদ্ধে গোপন তথ্য় সামনে আনবেন জামাই? লেনদেন সংক্রান্ত বহু রহস্য় উন্মোচিত হবে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের জামাইয়ের হাত ধরে? পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের জামিন পেয়ে জেল থেকে বেরোনোর সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হয়ে যাবে?
আরও পড়ুন, 'পুরভোটে হারিয়েছিলাম, বিধানসভা ভোটেও হারাব', শুভেন্দুর নিশানায় তাপসী !
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'নিজে বাঁচার জন্য় হয়েছেন হয়তো। রাজসাক্ষী হলে অনেক রিলাক্সেশন পাওয়া যায়। শাস্তি কমে যায়, বা শাস্তি হয় না। শ্বশুরকে বলিদান দিয়ে দিলেন। আমরা বাংলায় বলতাম, যম-জামাই-ভাগনা, কেউ নয় আপনার। প্রমাণ হয়ে গেল আরেকবার।