কলকাতা: এবার পাহাড়েও নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির ঢালাও অভিযোগ। আর সেই অভিযোগ আনলেন খোদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর তাঁর নিশানায় রাজ্যেরই দুই মন্ত্রী। শুভেন্দুর নিশানায় পাহাড়ের এক বড় নেতাও। 


পাহাড়ে বেআইনি নিয়োগ নিয়ে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকতে নিশানা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। কী অভিযোগ করেছেন তিনি? রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিয়োগ করেছে জিটিএ। বেআইনি নিয়োগে সরাসরি যুক্ত অনীত থাপা। আর সঙ্গে অরূপ বিশ্বাস এবং পার্থ ভৌমিক। অরূপ বিশ্বাস সরাসরি যুক্ত। যে বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়োগে তোলা হয়েছিল এর বড় অংশ অরূপ বিশ্বাসের হাত দিয়ে কলকাতায় এসেছে।' শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, পাহাড়ে চারশোর মতো নিয়োগ হয়েছে। পুরোটাই স্কুল সার্ভিস কমিশনের যে নিয়ম আছে, সেটা বাদ দিয়ে GTA থেকে নিয়োগ করেছে বলে তাঁর অভিযোগ। তিনি আরও বলেন, 'একটা নিয়োগের যে নিয়ম থাকে, শিক্ষাগত, SC-ST-OBC... এবং আপনার লিখিত এবং মৌখিক এই যে পুরো একটা প্রক্রিয়ার মধ্য়ে দিয়ে নিয়োগ হয়, সেই নিয়োগ ওখানে মানা হয়নি। এবং এর সঙ্গে সরাসরি অনীত থাপা যুক্ত। এর সঙ্গে কিছুটা হলেও বিনয় তামাঙ্গ যুক্ত, তবে বিনয় তামাঙ্গের অত বুদ্ধি নেই। সব কাণ্ড কারখানা অনীত থাপার। আর সঙ্গে অরূপ বিশ্বাস এবং পার্থ ভৌমিক।'


বিষয়টি নিয়ে তোপ দেগেছেন সেচমন্ত্রী ও ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী পার্থ ভৌমিক বলেন, 'আমি মানহানির মামলার চিঠি পাঠাচ্ছি শুভেন্দু বাবুর কাছে। ইচ্ছাকৃতভাবে আমার স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকে নষ্ট করার উদ্দেশ্য়প্রণোদিত চেষ্টা করছে।' তিনি আরও বলেন, 'ব্য়ারাকপুরের মানুষ আমায় জানে। ব্য়ারাকপুরের মানুষ জানে, এতবছর পরেও মন্ত্রী, MLA থাকার পরও, পার্থ ভৌমিকের নিজের কোনও গাড়ি নেই। এটা ভাবছে, ভোটযুদ্ধে না পেরে, ব্য়ক্তিগত চরিত্র নষ্ট করার চেষ্টা করছে মানুষের কাছে। ব্য়ারাকপুরের মানুষ আমায় চেনে, জানে। এসব করে কোনও লাভ হবে না।' এই বিষয়ে অরূপ বিশ্বাসের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। 


শুভেন্দু অধিকারীর করা এই অভিযোগ প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাননি অনীত থাপা। উল্লেখ্য়, পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একটি 'রহস্যজনক' চিঠিতে পাহাড়ে স্কুল শিক্ষক এবং পুরসভায় কর্মীদের বেআইনিভাবে নিয়োগের অভিযোগ করা হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী ও শাসক দলের প্রভাবশালী নেতাদের নাম। এই নিয়ে আগেই CID তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। বিধাননগর উত্তর থানায় অভিযোগও জানাতে যায় রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর। কিন্তু FIR দায়ের করেননি ওই থানার IC. এই কারণেই, বিধাননগর উত্তর থানার ICকে মঙ্গলবার তলব করে হাইকোর্ট। তাঁকে আদালত নির্দেশ দেয়, অভিযোগ পাওয়ার পরেও কেন FIR করা হয়নি? তা হলফনামা জমা দিয়ে তাঁকে জানাতে হবে কারণ। অন্য়দিকে, CBI-কে আদালত নির্দেশ দেয়, ওই 'রহস্যজনক' চিঠির সত্যতা অনুসন্ধান করতে হবে।  ১৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে হবে রিপোর্ট। 


পাশাপাশি, বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু GTA-কে নির্দেশ দেন, প্রায় ৭০০ জনের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা কতখানি? তাঁদের যোগ্যতা কী? কীভাবে তাঁদেরকে নিয়োগ করা হয়েছিল? তার নথি জমা দিতে হবে আদালতে। জিটিএ-র বিরুদ্ধে TET কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে, এর আগে CBI-কে চিঠি দিয়েছিলেন দার্জিলিঙের বিদায়ী সাংসদ রাজু বিস্তা। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: ১ দশকে ৩ গুণ বৃদ্ধি ভারতের স্টক মার্কেটে? টাকার পাহাড়ে বিনিয়োগকারীরা?